ভালোবাসার গল্প

2 15
Avatar for Bina123
4 years ago

ভালবাসার গল্প

<fg=b0ff007f>​– আমি তোকে ভালবাসি। (আসিফ)
— কিইইইই?? (আয়েশা)

— আমি তোকে ভালবাসি।

– আবার বল??

— আমি তোমাকে ভালবাসি আই লাউ ইউ।

— এদিকে আয়।

— কি??

— এদিকে আয় (ধমক স্বরে)

— হুমম

আসিফের দুগালে দুটা চড় বসালো আয়েশা। দুহাত দুগালে ধরে বোকার মত দাঁড়িয়ে রইলো আসিফ। আয়েশা হাত ঠিক করছে আর তাকে আঁড় চোখে দেখছে।

— কিছু বলবি?? (আয়েশা)

— হুমম। বলব। (আসিফ)

— বল,,

— আমি তোকে ভালবাসি।

— এদিকে আয় তো বাবু

— হুমম।

— কি হল,, হাত সরালি কেন??

— যাতে তুই মারতে পারিস।

— কিইইইই???

— মার। 

— মারব।

— হুমম মার।

— এই নে বলে আরো ২ টা লাগিয়ে দিল তার গালে। এতে আসিফের মুখে কোন বিরক্তির চাপ নেই। বরং হেসে হেসে গাল দুটো হাতায় আর বুকে হাত দেয়।

..

আসিফ আর আয়েশা অনার্স ফার্স্ট ইয়ারে পড়ে। দুজনই বেশ মেধাবী ছাত্র। সেজন্য শিক্ষকদের মুখে তাদের নাম প্রতিনিয়ত আসে। আয়েশা একটু চঞ্চল টাইপের মেয়ে। সারাদিন হৈ-হুল্লোড়,, মাস্তি-ঝগড়া, ক্যাম্পাসে আড্ডা-গান-ফুর্তি তার রুটিন হয়ে গেছে। আর তার সাথে যোগ দিয়েছে আসিফ। আসিফ হল তাদের ব্যাচের সবচেয়ে কিউট বয়। সবাই তাকে চকলেট বয় বলে ডাকে শুধু আয়েশা বাদে। সে তাকে পাগল বলে ডাকে। তাদের যখন প্রথম দেখা হয়েছিল সেদিনই আয়েশার হাতে দুটো চড় খেয়েছে। আর খাবেই বা না কেন,,,, প্রথম দিনই আয়েশা কে সবার সামনে প্রপোজ করে ফেলে। অথচ সে জানেই না যে ওর নাম কি,, কোথায় থাকে, কিসে পড়ে। ব্যাস, দেখল আর প্রপোজ করল। পরে আয়েশাকে ফলো করতে করতে বুঝল যে সে তার সাথে একি ডিপার্টমেন্টে পড়ে।আসিফ ওকে বন্ধুত্বের আহবান দিল কিন্তু আয়েশা গ্রহন করেনি। ২-৩ দিন পর কি জানি ভেবে রিকুয়েস্টটা এক্সেপ্ট করল আয়েশা। তারপর থেকে শুরু হয় তাদের মারা-মারি,, কথা কাটা-কাটি আড্ডা-মাস্তি সবকিছু। এতে তাদের বন্ধুরাও উৎসাহ দিত। এমন একদিনও নেই যে আসিফ আয়েশার হাতে চড় খায়নি। সবদিন তাকে “আমি তোকে ভালবাসি আই লাভ ইউ” বলত আর আয়েশা চড় মারত। এটা তাদের রুটিন মাফিক হয়ে গেছে।

.

কয়েকদিন ধরে আসিফ কলেজ আসছে না। কারো সাথে যোগাযোগ করছে না,,ফোন করলে ফোন অফ দেখায়। কিন্তু কেন?? আয়েশা একটু একটু চিন্তা শুরু হল। আসিফের কিছু হয়নি তো?? আবার পরক্ষনেই বলে উঠে আমি ওকে নিয়ে চিন্তা করব কেন?? ও আমার কি হয়?? এভাবে বার বার আসিফের কথা চিন্তা না করার প্রতিজ্ঞা করার পরও ওর চিন্তা চলে আসে। তার মানে আমি কি ওই পাগলটাকে ভালবাসি?? ভাবতে ভাবতে বাড়িতে ফিরে আয়েশা,, ফ্রেশ হয়ে খেয়ে ঘুমোতে গেল। কিন্তু কিছুতেই ঘুম আসছে না। বার বার পাগলটার মুখ সামনে ভাসছে। ওর কথাগুলো কানে বাজছে। ওর সাথে কাটানো প্রত্যেকটা মুহুর্তের কথা তাকে পাগল করে দিচ্ছে। এই প্রথম সে আসিফকে খুব মিস করছে। দেরি না করে আয়েশা রওনা দিল আসিফের বাড়িতে। কিন্তু আসিফকে পায়নি। দুশ্চিন্তায় পড়ে গেল আয়েশা। কি করবে ভেবে পাচ্ছে না। আসিফের মায়ের ডাকে বাস্তবে ফিরল।

— কাকে চাও?? (মা)

–আন্টি,, আসিফ কোথায়??

–ও তো বাড়িতে নেই।

— কোথায় গেছে??

— তা তো জানি না।

— ওহহ আচ্ছা ওকে। আমি যাই তাহলে।

— হুমম।

হতাশ হয়ে রাস্তায় হাঁটছে আয়েশা, আসিফকে খুব বেশি মনে পড়ছে। তার কথা ভাবতে ভাবতে পার্কের দিকে গেল। আয়েশার যখন মন খারাপ থাকে তখন সে এই পার্কে আসে।

..

মন খারাপ করে আসিফের কথা ভাবছে তখন পার্কের গেটে আসিফকে দেখতে পেল। কিন্তু একা না। সাথে একটি মেয়ে। আয়েশা দৌড় দিয়ে তার সামনে গেল কিন্তু আসিফ তার সাথে কোন কথা বলেনি। পাশ কাটিয়ে চলে গেল। আসিফের এমন কান্ড দেখে আয়েশা হতবাক হয়ে দাঁড়িয়ে রইল। পা সামনের দিকে বা পিছনের দিকে যাচ্ছে না। সারা শরীর ঠান্ডা হয়ে গেল। গায়ের লোম দাঁড়িয়ে গেল। চোখ থেকে ১ ফোটা ২ ফোটা করে জল পড়ল। হাঁটার শক্তি নেই তবুও আসিফের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করছে। অত:পর,,,,,

— কি হল,, তুই এখানে কি করছিস(আসিফ )

— ….. (আয়েশা শুধু কাদঁছে, কিছুই বলতে পারছে না)

— কি হল,, কাদঁছিস কেন?? তোর জন্য একটা সুখবর আছে। বলি???

— কি সুখবর?? (কাঁদো কাঁদো কন্ঠে তার সাথে রাগ মিশিয়ে)

— এই দেখ আমার গার্লফ্রেন্ড। নাম নিশি । আমি ওকে ভালবাসি।

— কিইইইইই?? (কান্নার গতি ২জি থেকে ৪জি তে রুপান্তরিত হল)

— এই এই,,, কাঁদিস কেন?? তোর তো খুশি হবার কথা।

— (কেঁদেই চলেছে,,, মনে হচ্ছে ঝর্নার সব জল আজ এখানেই শেষ করবে)

— আজ থেকে আর তোকে কোনদিন ডিস্টার্ব করব না। কখনও সবার সামনে প্রপোজ করব না। তোকে জ্বালাবো না। শান্তিতে ক্লাস করতে পারবি। ভালো করে বার্গার-পিজ্জা খেতে পারবি। আমি কেড়ে নেব না।

— (কি করে বলবে আয়েশা ,,, আসিফের এই পাগলামো গুলো তো তার দরকার)

— কি হল,, খুশি তো??

— আমাকে মাফ করেদে প্লিজ?? (কেঁদে কেঁদে)

— তুই আমার কাছে মাফ চাইছিস কেন?? মাফ তো চাইব আমি। আমি তোর সাথে অনেক অন্যায় করেছি। প্লিজ দোস্ত মাফ করে দে।

— আমি তোকে ভালবাসি আই লাভ ইউ। (এক নিশ্বাসে বলে গেল)

— কিইইইইই???

— আমি তোকে ভালবাসিরে। খুব খুব ভালবাসি। যতদিন আমার সাথে ছিলি আমি তোর ভালবাসা বুঝতে পারিনি। তোর মনের কথাকে পাগলামো বলে হেঁসে উড়িয়ে দিয়েছি,, আমার প্রতি তোর অঢেল ভালবাসা নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছি। কিন্তু এখন আমি সব বুঝতে পারছি। তোকে ফিরিয়ে দিয়ে আমি আমার জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল করেছি। প্লিজ ফিরে আয় আমার কাছে। প্রমিস করছি আর কোনদিন ফিরিয়ে দেব না। প্লিজ প্লিজ প্লিজ।

— এখন আর বলে কি হবে?? আমি তো এখন অন্য আরেকজনের। (হেসে হেসে)

— এভাবে বলিস না প্লিজ। তুই যা বলবি আমি তাই করব। মরতে বললে মরে যাব কিন্তু আমাকে এভাবে ফিরিয়ে দিস না।

— চুপ চুপ। একদম চুপ। কি বলছিস এইসব?? তুই মরে গেলে আমি কাকে নিয়ে বাঁচব?? তোকে নিয়ে আমার স্বপ্নগুলো কিভাবে বাস্তব করব?? প্লিজ এইকথা বলিস না।

— ওকে। আমাকে ___ (আসিফ আয়েশার মুখে হাত ধরে কথা কেড়ে নিল,,, বলল, যা বলার আমি-ই বলব।

— হুমম।

— আমি শুধু একটি মুহুর্তের জন্য তোর মায়াভরা মুখ থেকে ভালবাসি শব্দটা শুনতে চেয়েছিলাম কিন্তু তুই বলিস নি। মজা করে উড়িয়ে দিতিস। আমাকে মারতিস তবুও তোর পিছু ছাড়তাম না। কেন জানিস?? কারন, আমার এই বেহায়া মনটা শুধু তোকে চায়। তোকে সারাজীবন ভালবাসতে চায়। ২টা মন এক করে একসাথে বাঁচতে চায়। আর,,,,

— আর কি?? (খুশিতে আত্বহারা হয়ে)

— তুই চলে গেলে আমার দুগালে চড় কে মারবেরে পাগলি??

এক লাফে আসিফকে জড়িয়ে ধরল। 

— আই লাভ ইউ এত্তোগুলা এত্তোগুলা।

— আই লাভ ইউ টু থ্রি ফোর ফাইভ এত্তোগুলা এত্তোগুলা।

— দাঁড়া দাঁড়া,,, আগে বল এই মেয়েটা কে??

— ওহহ। ভূলে গেছি। ওর নাম নিশি। আমার মামাতো বোন। আমাদের বাসায় ৪-৫ দিন ধরে আছে কিন্তু আজ চলে যাবে।

— কেন?? আজ চলে যাবে কেন??

জেরিন ব্রেঞ্চ থেকে উঠে পড়ল আর বলল,,,

— আসিফ আমাকে এখানে আসতে বলেছিল। তার নাকি কি একটা সমস্যা আছে সেটা সলভ করতে। আর সেটা আজকে করলাম। তাই আজ চলে যেতে হবে।

— আজকে সলভ করলে মানে?? (আয়েশা)

— কিছু না কিছু না। চল চল। আমার ক্ষিদা লাগছে। (আসিফ )

— চুপ। একদম চুপ। (কড়া ধমক দিয়ে বলল আয়েশা)

— আসিফ তোমাকে ভালবাসে কিন্তু তুমি তাকে ভালবাসো না। সেজন্য আমি তাকে শিখিয়ে দিয়েছিলাম কয়েকদিন যেন তোমার সামনে না যায়।

— কিইইইই?? তার মানে তোমাদের এসব নাটক ছিল???

— হুমম। তুমি যখন তার বাড়িতে যাও তখন আমরা বাড়ির ছাদে ছিলাম। আসিফ জানত যে তাকে না পেয়ে তুমি কষ্ট পাবে সেজন্য তোমার পিছু পিছু নিয়ে পার্কে আসল। এর পরের ঘটনা তো তুমি জানোই।

— এই জেরিন,, তুই এত কথা বলিস কেন?? (আসিফ)

— তোর না অনেক ক্ষিদা পায়েছে?? হুমম,, (আয়েশা )

— হুমম পেয়েছে,,,না না পায় নি পায় নি। সত্যি বলছি। (দুগালে হাত দিয়ে)

— এদিকে আয়।

— না না।

— আয় বলছি (ধমক দিয়ে)

— কি?? (এখনও দুগালে দুহাত দিয়ে রাখছে)

— মুখ থেকে হাত সরা।

— না।

— সরা বলছি (ধমক দিয়ে)

— হুম। (চোখ বন্ধ করে হাত সরাচ্ছে আর মারিন মিটি-মিটি হাসছে)

— উম্মাহহহহহহ। (আসিফের এক গালে চুমু দিল)

— ….. (স্টাচু হয়ে দাড়িয়ে রইল)

— ওকে আমার পাগলটা দিচ্ছি। এই বলে অন্য গালে আরেকটা চুমু দিল।

— হাহাহাহা। মেঘ না চাইতে জল।

— কিইইই??

— কিছু না কিছু না। উম্মাহহহহহ।

হাতে হাত রেখে পাগল আর পাগলিটা হাঁটছে ঠিকানাহীন গন্তব্যে…!!!

এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান

ভালবাসার ঝগরা

Posted on অগাষ্ট 5, 2017 in ভালবাসার গল্প

আজ বউ আমাকে ছেড়ে তার বাপের

বাড়ি চলে গেছে। অপরাধ কিছুই না তেমন সামান্য
জিনিস নিয়েই ঝগড়া আর কি। এই মেয়েটা এত
অভিমানি কেন বুঝি না। বিয়ের আগে যখন
দেখা করতে দেরি হত তখন ই শুরু হয়ে যেত অভিমান।
একদিন দেরি করে দেখা করলাম। জেরিন বলল
-এই দেরি করলে কেন?
-আমার কি কাজ নাই? দেরি তো হতেই পারে।
-তোমার কি কাজ আমি জানি। সারাদিন ঘুমানো।
-কি বললে তুমি? ঘুমানো?
-তুমি আমার সাথে কথা বলবে না।
-কেন?
-তুমি আমা সাথে যোগাযোগ করবে না।
তুমি একটা মিথ্যেবাদী।
-আচ্ছা যাও যাও যোগাযোগ করবো না।
রেগে বাড়িতে চলে আসলাম। যাল
একটা ঝামেলা থেকে বাঁচলাম।
কিন্তু বাড়িতে আসার পরে খারাপ লাগলো। কেন
এমন করলাম। এর আগে অনেকবার এমন হয়েছে। জেরিন
নিজে থেকেই আমার রাগ ভাঙিয়েছে।আমার আমিও
অনেকবার রাগ ভাঙাইছি। কিন্তু এবারে ফোন
করবো না।
কিন্তু বাড়িতে এসে খারাপ লাগলো। ভাবলাম
নিজে থেকেই ফোন করবে কিন্তু অনেক সময় হলেও
ফোন করলো না।
.
একটু পরে মায়ের ফোন বেজে উঠলো।
মা রান্না করছিল। মা বলল
-রাব্বি।ফোনটা ধর।
-আমি পারবো না। তোমার ফোন তুমি ধরো গিয়ে।
-আরে বাপ। ফোনটা ধরলে কি হয়?
আমি রান্না করছি ফোনটা ধর।
মা আমাকে বাপ বলে ডাকছে। তাই যেতেই হবে।
গিয়ে ফোনটা হাতে নিয়ে আমি নিজেই অবাক
হলাম। কারন নাম্বারটা জেরিনের।
আমি মনে ভাবলাম একটু অভিনয় করি। তাই
ফোণোটা হাতে নিয়ে মেয়ে মানুষের
কন্ঠে কথা বললাম।
-হ্যালো।
-হ্যালো কেমন আছেন আন্টি?
-জি ভালো।তুমি কেমন আছো? তোমাদের বাড়ির
সবাই কেমন আছে?
-জি ভালো আছি। বাড়ির সবাই ও ভাল আছে।
আপনার কন্ঠ এমন শোনা যাচ্ছে কেন?
-না এমনি। কি মনে করে ফোন করলে?
-রাব্বি আছে বাড়িতে?
-কেন? রাব্বিকে দিয়ে কি করবে?
-ওর সাথে একটু কথা ছিল তো। তাই
কথা বলতে চাচ্ছি।
-ওর ফোন এ কল দাও।
-ওর সাথে রাগারাগি হয়েছে। তাই ওর
সাথে কথা বলতে চাচ্ছি না।
-রাগারাগি হয়েছে কেন?
-এমনি হয়েছে। আসলে ওর জন্য আমার খারাপ
লাগছে। ওর কাছে একটু দিন। কথা বলবো।
-তবে নামি আমার সাথে কথা বলবে না?(আসল
কন্ঠে)
-তুমি?
-হ্যা।আমি এতক্ষণ আমি কথা বললাম।
-তুমি ফোন ধরেছ কেন?আমি তোমার
সাথে কথা বলবো না।
-একটু আগে তো আমার জন্য খারাপ লাগছিল। আমার
সাথে কথা বলতে চাইলে।
-তখন এমনি বলেছি। কথা বলবো না।
-কথা বলতেই হবে।
একটু পরে মা এসে বলল
-কার ফোন।
-একটা পেত্নি।
-জেরিনের?
-হ্যা।
-আবার রাগারাগি করেছিস?
-আমি একা নাকি? ও জেরিন ও রাগ করেছে।
-দে ফোনটা আমার কাছে দে।আমি কথা বলছি।
.
একটু পরে মা ফোনে কথা বলল।
তারপরে আমার মোবাইল এ একটা এস এম এস আসলো।
“I Sorry Baby. I Miss You”
আমি কল ব্যাক করে আবার আগের মতই কথা বললাম।
.
এটা ছিল বিয়ের আগে।বিয়ের পরেও আমাদের
মাঝে রাগারাগি হয়।তবে বেশি সময়
রাগটা থাকে না। আবার আগের মত হয়ে যায়। কিন্তু
এবারে রাগটা ভাঙলোনা।
এবারে সরাসরি বাপের বাড়ি চলে গেল।
এদিকে মাও বাপের বাড়ি চলে গেছে। আবার বউ ও
চলে গেল। এখন বাড়ির কাজ করবে কে?
দুইজন দুইদিকে চলে গেছে। আর
মাঝখানে আমি পরে আছি।
বউ কে অনেকবার সরি বললাম। কিন্তু কাজ হলো না।
চলেই গেল।
.
এত রাগ কেন বুঝি না। বউ এর সাথে যতই ঝগড়া লাগুক।
বিবাহিত পুরুষের বউ ছাড়া থাকা কত কষ্ট
তা আমি বুঝে গেছি। কিন্তু এত রাগ করে কেন আমার
উপরে? আমি নাহয় রাগের মাথায় একটা থাপ্পড়
মেরেছিলাম। পরে তো সরি বলেছি। তাই বলে এমন
করতে হবে। তখন ভাবলাম
সরাসরি গিয়ে সরি বলবো বউ কে।তাই চলে গেলাম
শশুরবাড়িতে।কিন্তু বাসার ভেতরে গেলাম না।
ভাবলাম বউ কে সারপ্রাইজ দিবো। কিন্তু
এখানে এসে নিজেই সারপ্রাইজ হয়ে যাচ্ছি। অনেক
সময় ধরে বউ কে ফোন করছি। কিন্তু ফোন ধরছে না।
এমনিতেই শিত কাল ঠান্ডা লাগছে। তার
উপরে মশাও প্রচুর।
.
তাই বউ কে মেসেজ দিলাম “আচ্ছা তোমাদের
বাসার সামনে এত মশা কেন? আর
ঠান্ডা লাগছে কেন?”
মেসেজ দিয়ে বাসার সামনে দারিয়ে আছি।একটু
পরে বউ বারান্দায় এল। আসার সাথে আমি কান
ধরে সরি বললাম। কিন্তু বউ ভিতরে চলে গেল।একটু
পরে দেখি নিচে নেমে দৌড় দিয়ে আমার
কাছে চলে আসছে। কাছে আসতেই কান ধরে বলালাম
-সরি।মাফ করে দাও।
-আরে কান ধরে আছো কেন?
-তুমি আমার উপরে রাগ করে আছো। প্লিজ মাফ
করে দাও।
-কান ছারো। সবাই যদি দেখে আমার স্বামি কান
ধরে দারিয়ে আছে। তাহলে কি ভাববে? আর
আমি কি তোমার উপরে রাগ করে থাকতে পারি।
-সত্যি তুমি আমার উপরে রেগে নেই?
-নাহ। তোমার সব ভুল থাকলেও
আমি তোমাকে ক্ষমা করে দিবো।
-আসলে আমি থাপ্পড় টা মারতে চাই নি। হঠাত
করে।
-আমি জানি তখন তোমার মাথা ঠিক ছিল না। আর
আমার ও তখন তোমাকে ওই সব কথা বলা ঠিক হয় নি।
-তাহলে আমার উপরে রেগে চলে আসলে কেন?
-আমি অনেকদিনে এই
বাড়িতে বেড়াতে আসতে চাচ্ছিলাম। কিন্তু সময়
হচ্ছিল না।তাই ভাবলাম এই ঝগড়া টা কাজে লাগাই।
-আর আমার উপরে রাগ করে আসলে?
-আমি দেখলাম তুমি আমাকে কত ভালবাসো।আর
আমাকে ছাড়া তুমি কেমন থাকো।
-তোমাকে এই কয়দিন আমি এলটুও ভাল ছিলাম না।
তোমাকে অনেক মিস করেছি।
-আমিক তোমাকে অনেক মিস করেছি।
-তাহলে ফোন ধরলে না কেন?
-আমি চাচ্ছিলাম। তুমি নিজে এসে আমার রাগ
ভাঙাও।
-এখন তো রাগ ভাঙিয়েছি।
-বাসায় চলো। এখানে অনেক ঠান্ডা। আর মশাও
আছে।
-চলো বাসার ভেতরে যাই।
.
বউ এর সব রাগ এখন শেষ।
বাসার ভেতরে গিয়ে খেয়ে দেয়ে লেপের
ভেতরে শুয়ে পড়লাম। একটু পরেও বউ ও শুতে এল। এসেই
জিজ্ঞেস করলো
-তুমি গোসল করো নাই কয় দিন?
-মত্র দুইদিন।
-কি!! যাও তুমি আমার সাথে ঘুমাবে না।তুমি অন্য
জায়গায় ঘুমাবে।
-আমি এই ঠান্ডার ভেতরে কোথায় যাবো?
-তা জানি না। এখন ই বাথরুমে গিয়ে গোসল করো।
আমি তোমার জন্য গরম পানি দিচ্ছি।
.
বাধ্য হয়ে গোসল করতেই হলো। গোসল করতেই
ঠান্ডা শুরু হলো।তবে ভালও লাগছে। দুইদিন
ধরে গোসল করি নাই। তাই গায়ে গন্ধ হয়েছিল।এখন
আর গন্ধ নাই।তারাতারি লেপের
ভেতরে শুয়ে পরলাম। এবারে বউ এসে শুয়ে পরলো।
আর বলল
-ঠান্ডা লাগছে?
-তা লাগবে কেন?এই ঠান্ডায় গোসল করলে কি গরম
লাগে?
-আমি তোমাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমাবো। তাহলে আর
ঠান্ডা লাগবে না।
-হ্যা। ঘুমাও।
একটু পরে আর ঠান্ডা লাগলো না। বউ
আমাকে জড়িয়ে ধরেই ঘুমিয়ে পরলো।
ঘুমালে জেরিনকে আরো সুন্দর লাগে।তাই
তাকিয়ে থাকলাম সেই অপরুপ সুন্দরির দিকে।যত
দেখি ততই প্রেমে পরে যাই। এটাই আমার ভালবাসার
বউ।

এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান

ভালবাসার ঝগরা

Posted on অগাষ্ট 5, 2017 in ভালবাসার গল্প

আজ বউ আমাকে ছেড়ে তার বাপের

বাড়ি চলে গেছে। অপরাধ কিছুই না তেমন সামান্য
জিনিস নিয়েই ঝগড়া আর কি। এই মেয়েটা এত
অভিমানি কেন বুঝি না। বিয়ের আগে যখন
দেখা করতে দেরি হত তখন ই শুরু হয়ে যেত অভিমান।
একদিন দেরি করে দেখা করলাম। জেরিন বলল
-এই দেরি করলে কেন?
-আমার কি কাজ নাই? দেরি তো হতেই পারে।
-তোমার কি কাজ আমি জানি। সারাদিন ঘুমানো।
-কি বললে তুমি? ঘুমানো?
-তুমি আমার সাথে কথা বলবে না।
-কেন?
-তুমি আমা সাথে যোগাযোগ করবে না।
তুমি একটা মিথ্যেবাদী।
-আচ্ছা যাও যাও যোগাযোগ করবো না।
রেগে বাড়িতে চলে আসলাম। যাল
একটা ঝামেলা থেকে বাঁচলাম।
কিন্তু বাড়িতে আসার পরে খারাপ লাগলো। কেন
এমন করলাম। এর আগে অনেকবার এমন হয়েছে। জেরিন
নিজে থেকেই আমার রাগ ভাঙিয়েছে।আমার আমিও
অনেকবার রাগ ভাঙাইছি। কিন্তু এবারে ফোন
করবো না।
কিন্তু বাড়িতে এসে খারাপ লাগলো। ভাবলাম
নিজে থেকেই ফোন করবে কিন্তু অনেক সময় হলেও
ফোন করলো না।
.
একটু পরে মায়ের ফোন বেজে উঠলো।
মা রান্না করছিল। মা বলল
-রাব্বি।ফোনটা ধর।
-আমি পারবো না। তোমার ফোন তুমি ধরো গিয়ে।
-আরে বাপ। ফোনটা ধরলে কি হয়?
আমি রান্না করছি ফোনটা ধর।
মা আমাকে বাপ বলে ডাকছে। তাই যেতেই হবে।
গিয়ে ফোনটা হাতে নিয়ে আমি নিজেই অবাক
হলাম। কারন নাম্বারটা জেরিনের।
আমি মনে ভাবলাম একটু অভিনয় করি। তাই
ফোণোটা হাতে নিয়ে মেয়ে মানুষের
কন্ঠে কথা বললাম।
-হ্যালো।
-হ্যালো কেমন আছেন আন্টি?
-জি ভালো।তুমি কেমন আছো? তোমাদের বাড়ির
সবাই কেমন আছে?
-জি ভালো আছি। বাড়ির সবাই ও ভাল আছে।
আপনার কন্ঠ এমন শোনা যাচ্ছে কেন?
-না এমনি। কি মনে করে ফোন করলে?
-রাব্বি আছে বাড়িতে?
-কেন? রাব্বিকে দিয়ে কি করবে?
-ওর সাথে একটু কথা ছিল তো। তাই
কথা বলতে চাচ্ছি।
-ওর ফোন এ কল দাও।
-ওর সাথে রাগারাগি হয়েছে। তাই ওর
সাথে কথা বলতে চাচ্ছি না।
-রাগারাগি হয়েছে কেন?
-এমনি হয়েছে। আসলে ওর জন্য আমার খারাপ
লাগছে। ওর কাছে একটু দিন। কথা বলবো।
-তবে নামি আমার সাথে কথা বলবে না?(আসল
কন্ঠে)
-তুমি?
-হ্যা।আমি এতক্ষণ আমি কথা বললাম।
-তুমি ফোন ধরেছ কেন?আমি তোমার
সাথে কথা বলবো না।
-একটু আগে তো আমার জন্য খারাপ লাগছিল। আমার
সাথে কথা বলতে চাইলে।
-তখন এমনি বলেছি। কথা বলবো না।
-কথা বলতেই হবে।
একটু পরে মা এসে বলল
-কার ফোন।
-একটা পেত্নি।
-জেরিনের?
-হ্যা।
-আবার রাগারাগি করেছিস?
-আমি একা নাকি? ও জেরিন ও রাগ করেছে।
-দে ফোনটা আমার কাছে দে।আমি কথা বলছি।
.
একটু পরে মা ফোনে কথা বলল।
তারপরে আমার মোবাইল এ একটা এস এম এস আসলো।
“I Sorry Baby. I Miss You”
আমি কল ব্যাক করে আবার আগের মতই কথা বললাম।
.
এটা ছিল বিয়ের আগে।বিয়ের পরেও আমাদের
মাঝে রাগারাগি হয়।তবে বেশি সময়
রাগটা থাকে না। আবার আগের মত হয়ে যায়। কিন্তু
এবারে রাগটা ভাঙলোনা।
এবারে সরাসরি বাপের বাড়ি চলে গেল।
এদিকে মাও বাপের বাড়ি চলে গেছে। আবার বউ ও
চলে গেল। এখন বাড়ির কাজ করবে কে?
দুইজন দুইদিকে চলে গেছে। আর
মাঝখানে আমি পরে আছি।
বউ কে অনেকবার সরি বললাম। কিন্তু কাজ হলো না।
চলেই গেল।
.
এত রাগ কেন বুঝি না। বউ এর সাথে যতই ঝগড়া লাগুক।
বিবাহিত পুরুষের বউ ছাড়া থাকা কত কষ্ট
তা আমি বুঝে গেছি। কিন্তু এত রাগ করে কেন আমার
উপরে? আমি নাহয় রাগের মাথায় একটা থাপ্পড়
মেরেছিলাম। পরে তো সরি বলেছি। তাই বলে এমন
করতে হবে। তখন ভাবলাম
সরাসরি গিয়ে সরি বলবো বউ কে।তাই চলে গেলাম
শশুরবাড়িতে।কিন্তু বাসার ভেতরে গেলাম না।
ভাবলাম বউ কে সারপ্রাইজ দিবো। কিন্তু
এখানে এসে নিজেই সারপ্রাইজ হয়ে যাচ্ছি। অনেক
সময় ধরে বউ কে ফোন করছি। কিন্তু ফোন ধরছে না।
এমনিতেই শিত কাল ঠান্ডা লাগছে। তার
উপরে মশাও প্রচুর।
.
তাই বউ কে মেসেজ দিলাম “আচ্ছা তোমাদের
বাসার সামনে এত মশা কেন? আর
ঠান্ডা লাগছে কেন?”
মেসেজ দিয়ে বাসার সামনে দারিয়ে আছি।একটু
পরে বউ বারান্দায় এল। আসার সাথে আমি কান
ধরে সরি বললাম। কিন্তু বউ ভিতরে চলে গেল।একটু
পরে দেখি নিচে নেমে দৌড় দিয়ে আমার
কাছে চলে আসছে। কাছে আসতেই কান ধরে বলালাম
-সরি।মাফ করে দাও।
-আরে কান ধরে আছো কেন?
-তুমি আমার উপরে রাগ করে আছো। প্লিজ মাফ
করে দাও।
-কান ছারো। সবাই যদি দেখে আমার স্বামি কান
ধরে দারিয়ে আছে। তাহলে কি ভাববে? আর
আমি কি তোমার উপরে রাগ করে থাকতে পারি।
-সত্যি তুমি আমার উপরে রেগে নেই?
-নাহ। তোমার সব ভুল থাকলেও
আমি তোমাকে ক্ষমা করে দিবো।
-আসলে আমি থাপ্পড় টা মারতে চাই নি। হঠাত
করে।
-আমি জানি তখন তোমার মাথা ঠিক ছিল না। আর
আমার ও তখন তোমাকে ওই সব কথা বলা ঠিক হয় নি।
-তাহলে আমার উপরে রেগে চলে আসলে কেন?
-আমি অনেকদিনে এই
বাড়িতে বেড়াতে আসতে চাচ্ছিলাম। কিন্তু সময়
হচ্ছিল না।তাই ভাবলাম এই ঝগড়া টা কাজে লাগাই।
-আর আমার উপরে রাগ করে আসলে?
-আমি দেখলাম তুমি আমাকে কত ভালবাসো।আর
আমাকে ছাড়া তুমি কেমন থাকো।
-তোমাকে এই কয়দিন আমি এলটুও ভাল ছিলাম না।
তোমাকে অনেক মিস করেছি।
-আমিক তোমাকে অনেক মিস করেছি।
-তাহলে ফোন ধরলে না কেন?
-আমি চাচ্ছিলাম। তুমি নিজে এসে আমার রাগ
ভাঙাও।
-এখন তো রাগ ভাঙিয়েছি।
-বাসায় চলো। এখানে অনেক ঠান্ডা। আর মশাও
আছে।
-চলো বাসার ভেতরে যাই।
.
বউ এর সব রাগ এখন শেষ।
বাসার ভেতরে গিয়ে খেয়ে দেয়ে লেপের
ভেতরে শুয়ে পড়লাম। একটু পরেও বউ ও শুতে এল। এসেই
জিজ্ঞেস করলো
-তুমি গোসল করো নাই কয় দিন?
-মত্র দুইদিন।
-কি!! যাও তুমি আমার সাথে ঘুমাবে না।তুমি অন্য
জায়গায় ঘুমাবে।
-আমি এই ঠান্ডার ভেতরে কোথায় যাবো?
-তা জানি না। এখন ই বাথরুমে গিয়ে গোসল করো।
আমি তোমার জন্য গরম পানি দিচ্ছি।
.
বাধ্য হয়ে গোসল করতেই হলো। গোসল করতেই
ঠান্ডা শুরু হলো।তবে ভালও লাগছে। দুইদিন
ধরে গোসল করি নাই। তাই গায়ে গন্ধ হয়েছিল।এখন
আর গন্ধ নাই।তারাতারি লেপের
ভেতরে শুয়ে পরলাম। এবারে বউ এসে শুয়ে পরলো।
আর বলল
-ঠান্ডা লাগছে?
-তা লাগবে কেন?এই ঠান্ডায় গোসল করলে কি গরম
লাগে?
-আমি তোমাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমাবো। তাহলে আর
ঠান্ডা লাগবে না।
-হ্যা। ঘুমাও।
একটু পরে আর ঠান্ডা লাগলো না। বউ
আমাকে জড়িয়ে ধরেই ঘুমিয়ে পরলো।
ঘুমালে জেরিনকে আরো সুন্দর লাগে।তাই
তাকিয়ে থাকলাম সেই অপরুপ সুন্দরির দিকে।যত
দেখি ততই প্রেমে পরে যাই। এটাই আমার ভালবাসার
বউ।

এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান

ভাল লাগার গল্প,

Posted on মে 2, 2017 in ভালবাসার গল্প

<fg=b0ff7f00>orange মিষ্টি প্রেমের গল্প………..

-সবাই সরে দাঁড়ান।
ট্রাফিক পুলিশের দিকে হতাশ হয়ে তাকালাম। সে সব
গাড়ি সরিয়ে রাস্তা পরিষ্কার করছেন। বাস থেমে
আছে। একটুও নড়াচড়া করছে না। অবশ্য নড়াচড়া করার
কথা না। ট্রাফিক পুলিশ রাস্তা আটকে দিয়েছে। কারন,
একটু পরে এখান দিয়ে মেয়রের গাড়ি যাবে। তার
জরুরি মিটিং আছে। আগেই ফোন করে সেটা
জানিয়ে দিয়েছে। তাই ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্ব
পরেছে রাস্তা পরিষ্কার করা। আমার মত আরো
অনেকে গাড়ি থেকে নেমে সার্কাস দেখছে
যেন!
.
ফোনের রিংটোন বেজে উঠার সাথে ফোন
কেঁপে উঠল। বরাবর আমি ফোন ভ্রাইবেট করে
রাখি। সাথে রিংটোন। যাতে কল আসলে বুঝতে
পারি। ফোন বের করে রিসিভ করলাম। ওপাশ
থেকে আভা বলল
-কোথায় তুমি?
ওর কথা শুনে ভয় পেয়ে গেলাম। এমন হুংকার
ছেড়ে কথা বললে ভয় পাওয়া স্বাভাবিক। মাঝেমাঝে
মনেহয় আভার পুলিশের উচ্চপদস্থ কোন পদে
চাকরি করা উচিত। যাতে তার রাগে আর হুংকারে সবাই
ভয় পায়।
আমি প্রায়ই তার ঝারি খেয়ে ভয় পেয়ে যাই।
আমি আস্তে করে বললাম
-এইত আসছি। পথে আছি।
-সেটা অনেক্ষণ ধরে বলছ। আর কতক্ষণ!
-বলো না। জ্যামে আটকা পরে আছি।
-এটা নতুন কি! আসতে কতক্ষণ লাগবে সেটা বল।
এই দশ পনের মিনিট!
-এত সময়!
-কই এত সময়! অল্প সময়।
-তোমার দশ পনের মিনিট আমার জানা আছে। তাড়াতাড়ি
এস। একা একা এখানে ভাল লাগছে না।
-তবে কাউকে পাশে নাও।
-কি বললে!
আভা আরেকবার আমাকে ধমক দিল। আমি যদিও কথাটা
মজা করে বলেছি। তার পাশে অন্য কেউ আসলে
আমার কাছে অসহ্যকর।
.
-আপনি এখানে কেন! সরে দাঁড়ান।
পিছনে তাকিয়ে দেখলাম ট্রাফিক পুলিশ আমার কাছে
চলে এসেছে। কথা বলতে বলতে রাস্তার মাঝে
চলে এসেছি। অবশ্য জ্যাম থাকার কারনে কোন
সমস্যা হয়নি। তড়িঘড়ি করে রাস্তার একপাশে চলে
এলাম। ফোনটা এখনো কানের সাথে লাগিয়ে
রেখেছি। কিন্তু ওপাশ থেকে কোন আওয়াজ
আসছে না। আমিও কথা বলিনি। আমি কথা না বললে
এতক্ষণে তো আভার ঝারি শুরু হয়ে যেত।
.
ফোন হাতে নিয়ে দেখলাম ফোন অফ হয়ে
গিয়েছে!
তারমানে চার্জ শেষ!
ফোন নিয়ে এই এক ঝামেলায় আছি। চার্জ থাকেনা।
যখন তখন বন্ধ হয়ে যায়। নতুন ব্যাটারি লাগিয়েও
কোন লাভ হয়নি। নতুন ফোন কিনতে হবে।
কিন্তু চাইলেই সেটা সম্ভব না। মধ্যবিত্ত পরিবারের
সন্তান হলে চাওয়া পাওয়া গুলো অপূর্ন থেকে যায়।
.
-ভাই কয়টে বাজে?
পাশে দাঁড়ানো একজনের কাছে সময় জিজ্ঞেস
করলাম। লোকটা কিছুক্ষণ পরে বলল
-দশটা চব্বিশ।
কয়েকবার চেষ্টা করেও ফোন চালু করতে
পারলাম না। আশা ছেড়ে দিয়ে মরা ফোনটা
পকেটে ঢুকালাম। আভার সাথে দেখা করার কথা
সাড়ে দশটায়। কিন্তু এখান থেকে যেতে লাগবে
বিশ মিনিটের মত।
তবে হেটে গেলে ত্রিশ মিনিটেই হয়ে যাবে!
ঢাকার যে জ্যাম!।
ত্রিশ মিনিট হেটে যাওয়ার পথ গাড়িতে গেলে
তারচেয়ে বেশি সময় লাগে!
.
বাসের আশা বাদ দিয়ে হাটা শুরু করলাম। এই জ্যামে
আটকে থাকলে আমার কপালে শনি রবি আরো
অনেক কিছু আছে। যেটার দেখা পেতে চাই না।
আপাতত আভার দেখা পেলেই চলবে।
সকাল থেকে অনেকবার সে আমাকে ফোন
দিয়েছে। আটটার সময় আমার রওনা দেওয়ার কথা
ছিল। কারন আমি আভার সাথে দেখা করতে গেলেই
দেরি হয়ে যায়!
.
হাটতে হাটতে অনেক পথ চলে এসেছি।
আরেকটু গেলেই পেয়ে যাব। রাস্তার এক পাশ
দিয়ে হাটছি। বৈশাখ মাসের কড়া রোদ আমার গায়ে
আঁচড়ে পরছে। সে রোদে আমি ঝলসে যাচ্ছি।
এই বৈশাখ মাসের রোদে একটা সুবিধা আছে। মাঝে
মাঝে ক্লাস ফাকি দেওয়া যায়!
.
একটা ফুলের দোকান দেখে দাঁড়ালাম। পকেটে
হাত দিয়ে দেখলাম চল্লিশ টাকা আছে। ত্রিশ টাকায়
কয়েকটা গাদা ফুল কিনলাম। ফুলগুলো হাতে নিয়ে
আবার হাটতে থাকলাম।
এতক্ষণ ধরে হাটলেও ক্লান্ত হইনি। হাটার অভ্যাস
আছে।
.
পার্কে ঢুকে আশেপাশে তাকিয়ে হাটতে থাকলাম।
আভাকে এখন ফোন দিয়ে জিজ্ঞেস করা লাগত,
সে কোথায় অপেক্ষা করছে!
কিন্তু আমাকে সেটা করতে হয়না। তার বসার জন্য
নির্দিষ্ট একটা জায়গা আছে।
.
চুপি চুপি আভার পিছনে এসে দাঁড়ালাম। সে বারবার
ফোন কানের কাছে নিচ্ছে। বুঝতে পারলাম
কাউকে কল দিচ্ছে। পিছন থেকে ফোনের
দিকে তাকিয়ে দেখলাম আমার কাছে ফোন
দিচ্ছে!
.
-এই!
ফোনের দিকে খেয়াল থাকায় সে বুঝতে পারেনি
আমি তার পিছনে দাঁড়িয়ে আছি। আমার ডাক শুনে
ঘুরে তাকাল। আমাকে দেখে উঠে দাঁড়িয়ে বলল
-এই তোমার সমস্যা কি! ফোন বন্ধ কেন?
আভা কথাগুলো উচ্চস্বরে বলছিল। এমন ভাবে কথা
শুনে পার্কের অন্য সবাই তার দিকে তাকিয়ে
আছে।
সে রাগে আর ক্ষোভে ফেটে পরছে। কখন
যেন চোখ দিয়ে পানি বের হয়ে যাবে।
আমি ওর হাতটা ধরে বললাম
-সরি ফোন বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।
আভা কোন কথা না বলে সোজা আমাকে জড়িয়ে
ধরল। এতক্ষণে চেপে থাকা কান্না বের হয়ে
আছে। অনেকেই আমাদের দিকে তাকিয়ে
আছে।
আভার সেসবে খেয়াল নেই। কাঁদতে কাঁদতে
বলল
-জানো এতক্ষণ কতটা টেনশনে ছিলাম!
আমি চুপ করে থাকলাম। মনের সব ক্ষোভ ঝরে
পরুক।
.
আভার কান্না থামলে চোখ মুছে দিয়ে বললাম
-বস এবারে।
আভা আমার কাধে মাথা রেখে বসল। চুপচাপ থাকার
পরে নীরবতা ভেঙে বলল
-ফোন বন্ধ ছিল কেন!
-চার্জ ছিল না।
-চার্জ থাকবে কিভাবে! রাত জেগে মেয়েদের
সাথে চ্যাটিং করলে চার্জ থাকে!
-রাত জেগে চ্যাটিং করিনি। ফোনে সমস্যা
হয়েছে।
-সবই বুঝি। বুঝি তো! সুযোগ পেলেই তুমি অন্য
মেয়ের সাথে টাংকি মার!
আভার কথা শুনলে মুচকি হাসলাম। ওর এমন অভিযোগ
মাঝেমাঝে হয়। বিশেষ করে ফোন ধরতে
দেরি হলে অথবা ফোন বন্ধ পেলেই এমন
করে!
তাকে কি করে বুঝাব!
মনের পুরোটা জায়গা জুড়ে শুধুই সে। এতটুকু জায়গা
ফাকা নেই। সারাক্ষণ তাকে নিয়ে ভাবতেই সময়
শেষ। অন্য কাউকে নিয়ে ভাবার সময় বা সুযোগ
কোথায়!
.
কিছুক্ষণ চুপ থেকে তার অভিযোগ শুনলাম। সংসদে
বিল উপস্থাপন করার মত সে তার অভিযোগ উপস্থাপন
করছিল। আমি তার উত্তরে কিছু বলছিলাম না। বললে
বিরোধি দলের পাল্টা হাওয়ার মত আমার উপর
আক্রমণ হতে পারত!
.
-এই ফোনটা নাও।
আভা তার ব্যাগ থেকে একটা নতুন মোবাইল বের
করে আমার দিকে এগিয়ে দিল। আমি চুপচাপ তার
দিকে তাকিয়ে আছি। আমাকে চুপ থাকতে দেখে
বলল
-নাও বলছি। নাহলে তোমার খবর আছে। আর এখন
থেকে ফোন বন্ধ না পাই যেন। তবে তোমার
বারোটা বাজাব।
বাধ্য হয়ে ফোনটা নিলাম। আমার এক হাত পিছনে
লুকিয়ে রেখেছি। হাত পিছনে দেখে আভা বলল
-এই তোমার হাতে কি?
-কিছুনা।
-দেখি!
.
হাত সামনে এনে গাঁদাফুল হাতে দিলাম। প্রেমিক
প্রেমিকাকে সাধারণত গোলাপ ফুল দেয়। কিন্তু
আমি গাঁদাফুল দিচ্ছি! আভা ফুলগুলো দেখে বলল
-এগুলো!
-হ্যা। তোমায় খোঁপায় দিব।
-আমি খোঁপা করে দিচ্ছি।
আভা পিছন ঘুরে ওর চুল বেধে দিলাম। সবার অবাক
হওয়ার কথা! পার্কে প্রেমিক প্রমিকা পাশাপাশি বসে
বাদাম খায়। আমি সেখানে প্রেমিকার চুল বেধে
দিচ্ছি!
খোঁপা করে চুল বেধে দিয়ে ওর খোঁপায় ফুল
গুজে দিলাম।
.
আভার দিকে তাকিয়ে আছি। এখন তাকে দেখে
কে বলবে এই মেয়েটা খুব রাগি! রাগ হলে হুংকার
দেয় সেটাও বলার উপায় নেই। তবুও তার রাগে
আমার বিরক্ত নেই। তার রাগের মাঝে ভালবাসা
দেখতে পাই!
.
-ভালবাসি।
আভা আস্তে করে কথাটা বলেই থেমে গেল।
আমি শুনেও না শোনার ভান করে বললাম
-কি বললে!
-বললাম মাথা ফাটাব তোমার।
বলেই হাসতে শুরু করল।
হ্যা আভা আমার মাথা ফাটাবে! তাকে একটু কম
ভালবাসলেই আমার খবর আছে।
তাকে পুরোটা দিয়েই ভালবাসি। একটু কম
ভালবাসলেই আমার অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাবে।
অনেক ভালবাসি তাকে।
নাই-বা বললাম সে কথা। সব কথা কি বলে দিতে হয়!!

এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান

একটি সত্যি ভালোবাসার গল্প (যা সিনেমার কাহিনীকেও হার মানায়)

Posted on এপ্রিল 24, 2017 in ভালবাসার গল্প


সপ্না আর নিলয় ছোট বেলা থেকেই একসাথে বড় হয়। সপ্নার বাবা ট্যাক্সি চালায়, আর নিলয়ের বাবা একজন হোমিওপ্যাথি ডাক্তার। দুই ফ্যামিলির মধ্যে সম্পর্কটা মন্দ নয়।

সপ্না নিলয়কে মনে মনে ভালোবাসতো। কিন্তু কখনো বলতে পারে নি। তারা একত্রে অনার্স পাশ করে। নিলয়ের সরকারী চাকরি হয়। বাসা থেকে ধুমধাম করে বিয়ে দিয়ে দেয়। সপ্না বেচারি ঘরে বসে একা কাঁদে। কিছু করার থাকে না তার।

সপ্নার অবস্থা দেখে তার মা সপ্নাকে চেপে ধরে। জিজ্ঞেস করে সমস্যা কি। কান্নাবিজরিত গলায় সপ্না জানায় তার লুকানো প্রেমের কথা। তার একপেশে ভালোবাসার কথা।

সপ্নার পরিবারে দুঃখ নেমে আসে। সপ্নার বাবা জানতে পেরে মেয়েকে জলদি বিয়ে দেয়ার বেবস্থা করতে চান। কিন্তু সপ্নার এক কথা, তার মনের কোঠায় গভীরে সে নিলয়কেই বসিয়েছে। এখন কোনও অবস্থাতেই তার পক্ষে বিয়ে করা সম্ভব নয়। সে এমনকি এই বলে হুমকি দেয় যে বাড়াবাড়ি করলে সে আত্মহত্যা করবে। সপ্নার পরিবারের সবাই ভয় পেয়ে যায়। সাথে সাথে কষ্টও পায়। কিন্তু কিছু করার থাকে না। একমাত্র মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে শুধু দীর্ঘশ্বাস ফেলা ছাড়া।

বছর পাঁচেক পরের ঘটনা। সপ্না এখন ঢাকাতে একটি বেসরকারি স্কুলে শিক্ষিকা। গ্রামে ইধানিং যায় না সে। বাবা মার সাথে ফোনে কথা হয়। এক পুজার ছুটিতে ৫ দিনের জন্য গ্রামে গেলো সে। সে কি তখনো জ্যান্ত এইবারের গ্রামে ফেরা তার জীবনটা আমূল পাল্টে দিবে?

সপ্না বাসায় ফিরে দেখে বাসার সবার মাঝেই একটা কষ্ট উপলব্ধি করতে পারে। সপ্না মাকে জিজ্ঞেস করে কি হয়েছে? সপ্নার মা প্রথমে সপ্নাকে কিছুই বলে না। মেয়ের চাপাচাপিতে তিনি সব খুলে বলেন।

নিলয় গ্রামে এসেছে। তার একটা ফুটফুটে বাবু হয়েছে। বাবুটার বয়স মাত্র ২ বছর। বাবুটাকে জন্ম দিতে গিয়ে তার মা মারা যায়। নিলয় গ্রামে এসে সপ্নার মা বাবার সাথে দেখা করতে আসে। ছেলেটার মনে এক অদ্ভুত ক্ষোভ দেখতে পান তারা। এক চাপা কষ্ট।

সপ্না ঘটনা শুনে থ হয়ে যায়। জীবনটা কোনও সিনেমা নয় যে সে নিলয়ের বাচ্চাকে বড় করবে। তাকে নিজের মেয়ের মতো করে পালবে। কিন্তু সপ্নার খুব ইচ্ছে করে। আরও একবার সপ্না নিজের কাছে হেরে যায়। মুখ ফুটে বলতে পারে না তার গোপন ইচ্ছের কথা।

পুজার ছুটি শেষ। আজ বিকেলে সপ্না ঢাকায় ফিরে যাবে। ব্যাগ গুছুচ্ছে এসময় সপ্নার মা দৌড়ে এসে খবর দিলেন নিলয় এসেছে।

সপ্না চমকে যায়। সে চাচ্ছিল যেনও নিলয়ের সাথে তার দেখা না হয়। কি লাভ কষ্টের বুঝা বাড়িয়ে?

মায়ের কথায় অবশেষে নিলয়ের সাথে দেখা হয় তার। দুজনেই চুপচাপ। হটাত নিলয় বলে উঠে, “ঢাকায় থাকো শুনলাম? আমিও ঢাকায় থাকি। পরিবাগে। তুমি?”

“ধানমণ্ডিতে। আমরা ২জন ফ্রেন্ড একত্রে থাকি। ও আমার সাথে একই স্কুলে পড়ায়। আমাদের পাশের গ্রামেরই মেয়ে।”

আরও কিছু কথা বলে তারা একে অপরকে বিদায় জানায়। “ভালো থেকো” বলে ঘুরে নিজের রুমের দিকে হাঁটতে থাকে সপ্না। অজানা কষ্টে বুকটা ধুমরে মুচড়ে যাচ্ছে। নিজের মনের উপর অসম্ভব জোর খাটিয়ে ফিরে চলে সে রুমের পথে। 
ঘাড় ঘুরিয়ে শেষবারের মতো ফিরে তাকায় সে। দেখল নিলর দাঁড়িয়ে আছে তার কুলে একটা ফুটফুটে বাচ্চা নিয়ে। নিলয়ের চোখটা ভেজা। দূর থেকেও দেখা যাচ্ছে অশ্রুকণাগুলো। কেন যেনও বাচ্চাটাকে দেখার পর নিজেকে আটকে রাখতে পারে না সপ্না।

নিলয় এবং সপ্নার বিয়ে হয় তাদের উভয় পরিবারের অনুমতি নিয়ে। ঢাকার পরিবাগেই এখন আছি আমরা। আমিই সেই মেয়ে। আর আমার বাবা মা আমার নাম কি রেখেছেন জানেন? “আলো”। বাবা-মার কাছ থেকে পুরো ঘটনাটি শুনি আমি তাদের ১৪তম বিবাহবার্ষিকীতে। এরপরেই লিখে ফেলি। আর আজ জানিয়ে দিলাম পৃথিবীকে।

সবাই দোয়া করবেন আমার পরিবারের জন্য। আমি ক্লাস টেনে পড়ি এখন। আমি আমার মাকে হারিয়েছি, কিন্তু পেয়েছি তার চেয়েও একজন শ্রেষ্ঠ মমতাময়ী নারীকে। তোমাদের দুজনকেই অনেক অনেক ভালোবাসি মা-বাবা।

4
$ 0.00
Avatar for Bina123
4 years ago

Comments

Nice

$ 0.00
4 years ago