খুনি কে, পর্বঃ০১

1 30
Avatar for Bahadur2000.-chy
4 years ago

ব্রেকিং নিউজ নগরীর সদর ব্রিজের নিচে দুটি যুবতীর লাশ পাওয়া গেছে।যদি এই দুজনের লাশের দিকে ভালোভাবে দেখেন তাহলেই বুঝতে পারবেন এদেরকে খুবই ভয়ংকর ভাবে খুন করা হয়েছে।পুরো শরীরে কাটা ঢুকানো হয়েছে।এবং শরীরের বিভিন্ন অংশ জ্বালানো হয়েছে।তবে চেহারা একদম স্পষ্ট। দুইজন যুবতীর মধ্যে একজন হলো বিশিষ্ট ব্যবসায়ী হারুন রহমানের একমাত্র মেয়ে আলিয়া রহমান এবং আরেকজন হলো প্রাইমারি স্কুলের পিয়ন মন্ডল দাশের মেয়ে সুজিতা দাশ।এই দুজন যুবতীকে কেন এবং কে মেরেছে এই সম্পর্কে পুলিশ ও আমাদেরকে স্পষ্ট কোনো মতামত দিচ্ছে না। এই ঘটনা সম্পর্কে আরও আপডেট পাওয়ার জন্য খবর ২৪ ঘন্টার সাথেই থাকুন।

মিজানঃ দেখুন আপনার এখানে ভিড় করবেন না আমাদেরকে আমাদের কাজ করতে দিন।

আবিরঃ আমি আপনাদেরকে অনুরোধ করছি প্লিজ আপনারা এখানে অতিরিক্ত ভিড় করবেন না। পুলিশকে তাদের কাজ করতে দিন। আমার যত সাংবাদিক ভাই-বোনেরা আছে তাদেরকে বলতে চাই এই কেস সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য আপনাদেরকে পরবর্তীতে জানিয়ে দেওয়া হবে। দয়া করে এখানে কেউ ভিড় করবেন না। মিজান তাড়াতাড়ি এই ভিড় ক্লিয়ার করো আর বাহাদুর কোথায়?

মিজানঃ স্যার আমার মনে হয় বাহাদুর জ্যামে আটকা পরছে।

আবিরঃ মিজান যাই হোক না কেন বাহাদুরকে তাড়াতাড়ি আসতে বল।

মিজানঃ হ্যালো বাহাদুর কোথায় তুই?

আমিঃ এইতো আসতেছি জ্যামে আটকা পরছি।

মিজানঃ আবির স্যার তাড়াতাড়ি আসতে বলছে।

আমিঃ আরে আমি আর 20 মিনিটের মধ্যে পৌঁছাচ্ছি।

মিজানঃ আচ্ছা একেবারে থানায় চলে আসিস সেখানেই দেখা হবে।

আমিঃ আচ্ছা দেখা হবে।

মিজানের সাথে কথা শেষ করে মোবাইলটি পকেটে ঢুকালাম। সামনে তাকিয়ে দেখলাম অনেক লম্বা লম্বা জ্যাম তৈরি হয়েছে। তাই আর উপায় না পেয়ে রিক্সা থেকে নেমে হাটা শুরু করলাম। আমি বাহাদুর চৌধুরী। নগরীর সদরঘাট থানায় একজন সাব ইন্সপেক্টর। মা ও ছোট বোন রানীকে নিয়ে আমার পরিবার। কিছুক্ষণ আগে যে কল দিয়েছে সে হলো মিজান আমার বন্ধু। মিজানের কথা শুনে এতোটুকু ধারণা করতে পেরেছি যে অনেক স্ট্রং একটি কেস থানায় জমা হয়েছে না হলে আবির স্যার এভাবে ডাকে না। হঠাৎ পকেটে থাকা মোবাইলটা বেজে উঠল। মোবাইলটি হাতে নিয়ে দেখলাম একটি অচেনা নাম্বার থেকে কল এসেছে।

আমিঃ হ্যালো কে বলছেন?

মোবাইলের ও পাশে থাকা লোকটি বলে উঠলো,

লোকটিঃ খেলাতো এখনো মাত্র শুরু। কয়েকদিন পর তুই ও বলবি খুনি কে,খুনি কে, খুনি কে।

এতটুকু বলে কল কেটে দিল।

আমিঃ কি আজব মানুষ রে নিজেই কতগুলো কথা বলে নিজে কল কেটে দিল।

আমি সেই অচেনা নাম্বারে আবারো কল দেওয়ার চেষ্টা করলাম কিন্তু অদ্ভুত কোনোভাবেই সে নাম্বারে কল ঢুকছে না।অচেনা নাম্বারে আবার কল দিতে যাবো তার আগেই মিজানের ম্যাসেজ আসলো।ম্যাসেজ দেখে বুঝতে আর বাকি রইলো না যে সেটা কেস এর ম্যাসেজ।কেস সম্পর্কে যাবতীয় ডিটেইলস গুলো পড়তে পড়তে অবশেষে থানায় পৌঁছালাম।থানায় ঢুকতেই দেখলাম যতগুলো পুলিশ অফিসার আছে সবাই নিশ্চুপ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

মিজানঃ বাহাদুর তাড়াতাড়ি এখানে এসে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে যা।

মিজানে কথামতো আমি একটি লাইনে দাঁড়িয়ে গেলাম। একটু পরে আবির স্যার ও ডাক্তার মিসবাহ আসলেন।

আবিরঃ তাহলে কি থানায় ডিউটি রত সব অফিসার কে এখানে উপস্থিত?

সবাইঃ জি স্যার।

আবিরঃ আজকে সদর ব্রিজের নিচে যে দুটি লাশ পাওয়া গেছে সে দুটি লাশ সম্পর্কে ডাক্তার মিসবাহ আপনাদেরকে কিছু তথ্য দেবে সেগুলো ভালো করে শুনুন।

মিসবাহঃ অত্যাচার শব্দটার সাথে আমরা কমবেশি সবাই পরিচিত কিন্তু ভয়ঙ্কর অত্যাচার এই শব্দটার সাথে হয়তো আমরা সবাই পরিচিত না। যদি এক কথায় বলি তাহলে একটা কথাই বলতে হয় এই খুনি ভয়ঙ্কর অত্যাচারে মাধ্যমে এই দুটি খুন করেছে। আমরা সাধারণত দেখি কোন খুনি চুরি, কিংবা গুলি অথবা শ্বাসরুদ্ধ করে খুন করে। কিন্তু এই খুনি সম্পূর্ণ ভিন্ন ভাবে খুন করেছে।খুন নিয়ে আলোচনা করার আগে বলে রাখি যে এই দুজনের মধ্যে একজনের নাম আলিয়া এবং আরেকজনের নাম সুজিতা আর দুজনকে একইভাবে মারা হয়েছে। তবে একটা জিনিস স্পষ্ট যে এই খুনগুলো একদিনে করা হয়নি বরং ২-৩ দিন সময় নিয়ে ঠান্ডা মাথায় করা হয়েছে। যেমন খুনি প্রথমে শরীরের মধ্যে যে অনেকগুলো কাটা ঢুকিয়েছে। খুনি যে কতগুলো কাটা ঢুকিয়েছে তা এখনোও গুনে শেষ করতে পারলাম না। তারপর যখন মেয়েদুটি ব্যাথায় ছটফট করছিল তখন তাদের শরীরকে আগুনে পুড়েছে আর শুধু তাই নয় আগুনে পোড়ানোর পরও তাদের কে জীবিত রেখেছে তারপর তাদেরকে ঠান্ডা বরফের মধ্যে রেখেছে। এভাবে দু-তিনদিন অত্যাচার করার পর খুন করেছে। তবে এই কেসের সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং বিষয় কি জানো আবির?

আবিরঃ কি?

মিসবাহঃ খুনি দুজনের চেহারাতে একটি দাগ পর্যন্ত দেয়নি এবং এই কেস সম্পর্কে একটি ক্লুও রাখেনি যেটা দ্বারা কেসটি এগিয়ে নিতে পারবো।

আবিরঃ তাহলে তোমরা ডাক্তার মিসবাহের কথা শুনে বুঝতে নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছ যে খুনি কে সেই সম্পর্কে আমাদের কাছে কোন আইডিয়া নেই এবং এই কেসটি একটি ক্লু বিহীন কেস। মন্ত্রী বর্গ থেকে অর্ডার এসেছে যে এই কেসটা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বন্ধ করে দেওয়ার জন্য। আলিয়ার বাবাও চাইছেন না যে এই ব্যাপারটা আরো বেশি ছড়িয়ে পড়ুক। তারা ধারণা করছে হয়তো কোনো ব্যবসায়িক লেনদেনের কারণেই হয়তো তার মেয়েকে খুন করেছে আর আমরা এটাও জানি যে আলিয়ার বাবা হারুন রহমানের অনেক অনৈতিক ব্যবসা আছে যদি আলিয়ার মৃত্যুর কেসটা চলতে থাকে তাহলে হয়তো তার অনৈতিক ব্যবসায় সমস্যা হবে। তাই উপর থেকে আমার কাছে অর্ডার এসেছে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কেস টা বন্ধ করে দেওয়ার জন্য। কিছুক্ষণ পর সাংবাদিকদের কে ডেকে এটা একটি ব্যবসায়িক সমস্যা বলে কেসটা ধামাচাপাঁ করে দিব এবং তাদেরকে বলবো কেস সম্পর্কে আমরা তদন্ত করছি। সবাই কি আমার সাথে একমত?

সবাই আবির স্যারের কথায় সম্মতি জানালেও আমি কোনভাবেই আবির স্যারের কথা মেনে নিতে পারছিলাম না।

আমিঃ স্যার এটা তো ঠিক না বাইরে একবার তাকিয়ে দেখেন সুজিতার বাবা মা অনেক বেশি কান্না করছে। কিছুক্ষণের জন্য যদি আমি আপনার কথা মেনে নেই যে আলিয়াকে ব্যবসায়ীক কারণে খুন করা হয়েছে তাহলে এটা বলুন যে সুজিতাকে কেন খুন করা হয়েছে? সুজিতার বাবাতো একজন সাধারন পিয়ন। আর সুজিতা ডাক্তারি পড়ছে। আমার মনে হয় এই কেসটা অনেক রহস্যময় কেস আর কেসটা শুধু এই দুটো খুনের মধ্যে থেমে থাকবে না ভবিষ্যতে এরকম আরো খুন হবে। তাই আমাদের উচিত এই কেস সম্পর্কে স্টাডি করা।

আবিরঃ বাহাদুর সিনেমা জগৎ থেকে বের হয়ে বাস্তব জগতে আসো। তোমার এই ডায়লগ গুলো সিনেমা অথবা গল্পতেই ভালো লাগে বাস্তবে এসব ডায়লগ এর কোন মূল্য নেই।

আমিঃ স্যার আমি ডায়লগ বলছি না আমি শুধু এটাই বলছি যে সুজিতা কে কেন মারা হয়েছে এটলিস্ট এটা আমাদের স্টাডি করা দরকার।

আবিরঃ আচ্ছা ঠিক আছে তুমি আমাকে যে প্রশ্ন করেছো আমি সেই একই প্রশ্ন তোমাকে করছি। এখন আমাকে বল সুজিতা কে কেন মারা হয়েছে?

আমিঃ স্যার এটা তো কেসটা স্টাডি করার মাধ্যমে জানতে পারবো।

আবিরঃ তা আমরা কিভাবে কেস স্টাডি করি?

আমিঃ ক্রাইমসিন অথবা ভিকটিমের বডি থেকে এমন সন্দেহভাজন কিছু যেটার মাধ্যমে কেসটা এগোতে পারবো সেই জিনিস গুলো নিয়ে কেস স্টাডি করি।

আবিরঃ কিন্তু ডাক্তার মিসবাহ তো বলেই দিয়েছে যে এই কেসে এমন কিছুই পাওয়া যায়নি। এটি সম্পূর্ণ একটি ক্লু বিহীন কেস। এখন বলো এটা কিভাবে স্টাডি করবে?

আমিঃ আসলে,,,,,,

আবিরঃ হ্যাঁ আমি শুনছি তুমি বলো। কি হল চুপ করে আছো কেন? এখন বুঝতে পেরেছে তো ডায়লগ বলাটা যতটা সহজ করা ততটাই কঠিন। এই কেসটা নিয়ে আর কোন কথাই হবে না কিছুক্ষণের মধ্যেই কেসটি অফিশিয়ালি বন্ধ করে দেওয়া হবে।

এতোটুকু বলে আবির স্যার তার কেবিনে চলে গেলেন। ডাক্তার মিসবাহ ও থানায় কর্মরত অন্যান্য অফিসাররাও নিজ নিজ ডেস্কে বসে কাজ করা শুরু করলো।

মিজানঃ বন্ধু তোর কথাগুলো শুনে মনে হল আমি অনেকদিন পর রাতসাসান এর মত একটা থ্রিলার কেস দেখতে পারবো কিন্তু আবির স্যারের কারণে সেটা আর সম্ভব হলো না।

আমিঃ মিজান প্রত্যেকটা থ্রিলার কেসকে রাতসাসানের সাথে তুলনা না করাই ভালো। হয়তো এই কেসটা রাতসাসান থেকেও ভয়ঙ্কর হবে আর তুই একবার সুজিতার মা-বাবার চেহারাটা দেখ। তারা দুজন কিভাবে কান্না করছে একবার দেখ।

আমি থানা থেকে বের হতেই সুজিতার মা দৌড়ে আমার কাছে আসলো,

সুজিতার মাঃ বাবু আমার মেয়েটা অনেক শখ ছিল ডাক্তার হয়ে গরীব মানুষদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দিবে কিন্তু কিছু মানুষের কারণে সে তার শখ পূরণ করতে পারলো না। বাবু তুমি কি আমার মেয়ের হত্যার ন্যায় বিচার দিতে পারবে?

সুজিতার বাবাঃ বিশ্বাস করো আমার মেয়ের সাথে কারো কোন শত্রুতা ছিল না আর আমি তো সামান্য একটা পিয়ন আমিই বা কার ক্ষতি করতে পারবো? আচ্ছা কয়েকজন পুলিশ অফিসার বলছেন এই কেসটা নাকি এখানেই বন্ধ হয়ে যাবে তাহলে কি আমি আমার মেয়ের হত্যার ন্যায়বিচার পাব না? এই দেশে কি এভাবেই গরীবদের উপর অত্যাচার হতে থাকবে?

সুজিতার বাবার কথা গুলো শুনে নিজেকে আর ধরে রাখতে পারলাম না। সুজিতার বাবাকে জড়িয়ে ধরলাম। কি বলব কিছু বুঝে উঠতে পারছিলাম না। নিজেকে পুলিশ বলতে লজ্জা হচ্ছে। পুলিশ নাকি জনগণের সেবক আর সেখানে আমিই বা কি করছি।

মিজানঃ বাহাদুর আয়, আবির স্যার বলতেছে যেসব কেস পেন্ডিং আছে সেগুলো শেষ করতে।

থানায় ঢুকে নিজের ডেস্কে বসে কাজ করতে লাগলাম কিন্তু কিছুতেই কাজে মন বসছে না। আলিয়া আর সুজিতার খুনের বর্ণনাগুলো মাথায় ঘুরছে। একটা মানুষের পক্ষে কিভাবে সম্ভব এত বাজে ভাবে খুন করা। আমার মোটেও এইখুনগুলোকে সাধারণ খুন মনে হচ্ছে না।এই খুনগুলার পিছনে নিশ্চয়ই রহস্য লুকিয়ে আছে।

জানালা দিয়ে তাকিয়ে দেখলাম সুজিতার বাবা ও মা পাগলপ্রায় হয়ে গেছে। মানুষ খুবই অদ্ভুত কেউ তাদের সম্মানের ভয়ে নিজের মেয়ের হত্যাকেও ধামাচাপা দিয়ে দেয় আবার কেউ হত্যার বিচার চাইতে ও ব্যার্থ হয়। ৩-৪ টি চুরির কেস সলভ করতে করতে প্রায় রাত হয়ে গেল। রাতে ঘরে ফিরতেই দেখলাম আম্মু আমার জন্য খাবার নিয়ে অপেক্ষা করছে,

আম্মুঃ তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে খাবার খেতে আয়।

আমিঃ আচ্ছা আসছি।

খাবারের টেবিলে বসতেই রানী আসলো।

আম্মুঃ আমার কথা শোন তোর বোনকে একটু বকা দে।

আমিঃ আজব রানীকে বকা দেবো কেন? রানী কি করছে?

রানীঃ ভাইয়া দেখো না আম্মু সারাদিন শুধু আমার পিছনেই লেগে থাকে। আমি নাকি সারাদিন মোবাইল চালায়।

আম্মুঃ ঠিকই তুইতো সারাদিনই মোবাইল চালাস আর মোবাইলের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে হাসিস। ঘরের একটা কাজেও আমাকে সাহায্য করে না। যদি কাল বাদে পরশু রানীর বিয়ে দিয়ে দেয় তাহলে বল কাজগুলোকে করবে? তখন কি রানীর শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে তার কাজগুলো আমি করে দেবো?

আমিঃ আজব আপনি কেন করবেন?

আম্মুঃ সেটাই রানী এক্টু বুঝিয়ে বল।

আমিঃ আমি রানীর শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে তার সব কাজ করে দেবো।

রানীঃ ভাইয়া আই লাভ ইউ।

আম্মুঃ হ্যাঁ হ্যাঁ এভাবে আস্কারা দিতে থাক। আস্কারা দিতে দিতে মেয়েটাকে মাথার উপরে তুলে ফেল। রানীর জন্য আমি ভালো কয়েকটা পাত্র দেখেছি তুইও দেখ ভাল লাগলে আগামী মাসেই প্ বিয়ে দিয়ে দিব।

রানীঃ ভাইয়া আমার কিন্তু এখন বিয়ে করার কোন ইচ্ছে নেই।

আম্মুঃ বিয়ে করার ইচ্ছা নেই বললে হবেনা তোকে অবশ্যই বিয়ে করতে হবে।

আমিঃ আচ্ছা, আচ্ছা, এখন দুজন ঝগড়া করে লাভ নেই আমি এসব বিষয় নিয়ে কালকে কথা বলবো।

খাবার শেষ করে ঘুমানোর চেষ্টা করলাম কিন্তু কিছুতেই ঘুম আসছে না। এখনো মাথায় সুজিতার বাবা-মার কথাগুলো ঘুরছে। তাদের কান্না করার দৃশ্য গুলো মাথায় ঘুরছে। নিহাল স্যারের বলা কথা গুলো কিছুতেই ভুলতে পারছিনা। আপনজনকে হারানোর দুঃখ আমি খুব ভাল করেই জানি। আমার বাবাও একজন পুলিশ অফিসার ছিলেন। অনেক ছোট ছিলাম যখন বাবা মারা যায়। বাবা মারা যাওয়ার পর তার মৃত্যুটাকে আত্মহত্যা বলেছিল কিন্তু পরবর্তীতে যখন আমি বড় হয়েছি তখন বুঝতে পেরেছি এটি একটি খুন ছিল। কিন্তু একজন পুলিশ অফিসারের পরিবারের সদস্য হওয়ার পরেও আমি বাবাকে ন্যায় বিচার দিতে পারিনি কিন্তু কয়েক বছর আগে জানতে পেরেছি যারা আমার বাবাকে খুন করেছিল তারা নাকি একটি ইনকাউন্টারে মারা গেছে। ঠিক তখন থেকেই চিন্তা করে ফেলেছিলাম যে পুলিশ হয়ে দেশের রক্ষা করব। এখন পর্যন্ত যতগুলো কেস পেয়েছি সবসময় চেষ্টা করেছি সব গুলো সল্ভ করে তাদের প্রিয়জনদের মুখে হাসি ফোটাতে কিন্তু সত্যি বলতে আজকে সুজিতার মা বাবার মুখে আমি হাসি ফোটাতে ব্যার্থ। আজকের খুনটা কে অনেক বড় একটি রহস্যময় খুনের সূচনা মনে হচ্ছে। এসব কথা চিন্তা করছিলাম ঠিক এমন সময় রুমে রানী ঢুকলো।

রানীঃ ভাইয়া আপনাকে অনেক্ক্ষণ যাবত একজন কল দিয়েই যাচ্ছে।

আমিঃ আচ্ছা মোবাইল আমাকে দে।

রানী আমার হাতে মোবাইল দিয়ে চলে গেলো।মোবাইল হাতে নিয়ে দেখলাম মিজানের ২০টির ও বেশি কল এসেছে।

মিজানঃকিরে কল ধরছিস না কেন?

আমিঃ সরি রে মোবাইল হাতের কাছে ছিল না।

মিজানঃ আচ্ছা এসব কথা বাদ দে। তাড়াতাড়ি থানায় চলে আয়।

আমিঃ কেন কি হয়ছে?

মিজানঃ থানায় আসলেই সব বুঝতে পারবি।

আমি থানায় ঢুকতেই দেখলাম আরো দুটো যুবতী মেয়ের লাশ সামনে রাখা আছে। তাহলে কি আরো দুটো খুন হয়ে গিয়েছে?

মিজানঃ বাহাদুর তোর ধারণাই সঠিক। আলিয়া ও সুজিতাকে যেভাবে খুন করা হয়েছিল ঠিক একইভাবে এই দুইজনকেও খুন করা হয়েছে। এই দুজনের লাশ দেওয়ান ব্রিজের নিচ থেকে পাওয়া গেছে।

আমি আবির স্যারের দিকে তাকিয়ে বুঝতে পারলাম আবির স্যার অনেক বেশি চিন্তিত।

আমিঃ মিজান আজকে সকালে যখন আলিয়া ও সুজিতার খুন হয়েছিল তখন তো আবির স্যারকে অত চিন্তিত মনে হয়নি কিন্তু এখন কেন এত চিন্তিত মনে হচ্ছে? আবির স্যার প্রচুর পরিমাণে ঘেমে যাচ্ছে আর এদিক সেদিক হাটাহাটি করছে।আবির স্যারের মুখে স্পষ্ট ভয়ের ছাপ দেখতে পাচ্ছি। তাহলে কি আবির স্যারের আপন কেউ মারা গেছে!

মিজানঃ,,,,,,,,,

চলবে,,

গল্পঃ #খুনি_কে

পর্বঃ০১

লেখকঃ @Bahadur2000.-chy

5
$ 1.01
$ 0.70 from @Ehsan2010
$ 0.30 from @Mizanur-Emon
$ 0.01 from @TheRandomRewarder
Avatar for Bahadur2000.-chy
4 years ago

Comments