সুশান্ত পলের মোটিভেশন

3 29
Avatar for Athai
Written by
4 years ago

২৭ বছর বয়সে যখন হন্যে হয়ে ব্যাংকে চাকরি খুঁজছেন,তখন আপনারই বয়েসি কেউ একজন সেই ব্যাংকেরই ম্যানেজার হয়ে বসে আছেন।আপনার ক্যারিয়ার যখন শুরুই হয়নি,তখন কেউ কেউ নিজের টাকায় কেনা দামি গাড়ি হাঁকিয়ে আপনার সামনে দিয়েই চলে যাচ্ছে।

কর্পোরেট যে সবসময় চেহারা দেখে প্রমোশন দেয়,তা নয়।দিন বদলাচ্ছে,কনসেপ্টগুলো বদলে যাচ্ছে।শুধু বেতন পাওয়ার জন্য কাজ করে গেলে শুধু বেতনই পাবেন।কথা হল,কেন এমন হয়?সবচাইতে ভালটি সবচাইতে ভালভাবে করে কীভাবে?কিছু ব্যাপার এক্ষেত্রে কাজ করে। দুএকটি বলছি। প্রথমেই আসে পরিশ্রমের ব্যাপারটা।যারা আপনার চাইতে এগিয়ে,তারা আপনার চাইতে বেশি পরিশ্রমী। এটা মেনে নিন। ঘুমানোর আনন্দ আর ভোর দেখার আনন্দ একসাথে পাওয়া যায় না। শুধু পরিশ্রম করলেই সব হয় না।তা-ই যদি হত,তবে গাধা হত বনের রাজা।শুধু পরিশ্রম করা নয়,এর পুরস্কার পাওয়াটাই বড় কথা। অনলি ইওর রেজাল্টস্ আর রিওয়ার্ডেড,নট ইওর এফর্টস্।আপনি এক্সট্রা আওয়ার না খাটলে এক্সট্রা মাইল এগিয়ে থাকবেন কীভাবে?সবার দিনই তো ২৪ ঘণ্টায়।আমার বন্ধুকে দেখেছি,অন্যরা যখন ঘুমিয়ে থাকে তখন সে রাত জেগে আউটসোর্সিং করে।ও রাত জাগার সুবিধা তো পাবেই!আপনি বাড়তি কী করলেন,সেটাই ঠিক করে দেবে,আপনি বাড়তি কী পাবেন।আপনি ভিন্ন কিছু করতে না পারলে আপনি ভিন্ন কিছু পাবেন না।বিল গেটস রাতারাতি বিল গেটস হননি।শুধু ভার্সিটি ড্রপআউট হলেই স্টিভ জবস কিংবা জুকারবার্গ হওয়া যায় না।

আমার মত অনার্সে ২.৭৪ সি জিপিএ পেলেই বিসিএস আর আইবিএ ভর্তি পরীক্ষায় ফার্স্ট হয়ে যাওয়া যাবে না। আউটলায়ার্স বইটি পড়ে দেখুন।বড় মানুষের বড় প্রস্তুতি থাকে।নজরুলের প্রবন্ধগুলো পড়লে বুঝতে পারবেন,উনি কতটা স্বশিক্ষিত ছিলেন।শুধু রুটির দোকানে চাকরিতেই নজরুল হয় না। কিংবা স্কুল কলেজে না গেলেই রবীন্দ্রনাথ হয়ে যাওয়া যাবে না।সবাই তো বই বাঁধাইয়ের দোকানে চাকরি করে মাইকেল ফ্যারাডে হতে পারে না,বেশিরভাগই তো সারাজীবন বই বাঁধাই করেই কাটিয়ে দেয়। স্টুডেন্টলাইফে কে কী বলল,সেটা নিয়ে মাথা ঘামাবেন না।আমাদের ব্যাচে যে ছেলেটা প্রোগ্রামিং করতেই পারত না,সে এখন একটা সফটওয়্যার ফার্মের মালিক।যাকে নিয়ে কেউ কোনদিন স্বপ্ন দেখেনি,সে এখন হাজার হাজার মানুষকে স্বপ্ন দেখতে শেখায়। ক্যারিয়ার নিয়ে যার তেমন কোন ভাবনা ছিল না,সে সবার আগে পিএইচডি করতে আমেরিকায় গেছে।সব পরীক্ষায় মহাউত্সাহে ফেল করা ছেলেটি এখন একজন সফল ব্যবসায়ী। আপনি কী পারেন,কী পারেন না,এটা অন্য কাউকে ঠিক করে দিতে দেবেন না।পাবলিক ভার্সিটিতে চান্স পাননি? প্রাইভেটে পড়ছেন? কিংবা ন্যাশনাল ভার্সিটিতে? সবাই বলছে,আপনার লাইফটা শেষ?আমি বলি,আরে!আপনার লাইফ তো এখনো শুরুই হয়নি।আপনি কতদূর যাবেন,এটা ঠিক করে দেয়ার অন্যরা কে?লাইফটা কি ওদের নাকি?আপনাকে ডাক্তার- ইঞ্জিনিয়ার হতেই হবে কেন?কিংবা ডাক্তারি পাস করে কেন ডাক্তারিই করতে হবে?আমার পরিচিত এক ডাক্তার ফটোগ্রাফি করে মাসে আয় করে ৬-৭ লাখ টাকা।

যেখানেই পড়াশোনা করেন না কেন,আপনার এগিয়ে যাওয়া নির্ভর করে আপনার নিজের উপর। শুধু ‘ওহ শিট’,’সরি বেবি’,’চ্যাটিং ডেটিং’ দিয়ে জীবন চলবে না।আপনি যার উপর ডিপেনডেন্ট,তাকে বাদ দিয়ে নিজের অবস্থানটা কল্পনা করে দেখুন।যে গাড়িটা করে ভার্সিটিতে আসেন,ঘোরাঘুরি করেন,সেটি কি আপনার নিজের টাকায় কেনা?ওটা নিয়ে ভাব দেখান কোন আক্কেলে? একদিন আপনাকে পৃথিবীর পথে নামতে হবে। তখন আপনাকে যা যা করতে হবে,সেসব কাজ এখনই করা শুরু করুন। জীবনে বড় হতে হলে কিছু ভাল বই পড়তে হয়,কিছু ভাল মুভি দেখতে হয়,কিছু ভাল মিউজিক শুনতে হয়,কিছু ভাল জায়গায় ঘুরতে হয়,কিছু ভাল মানুষের সাথে কথা বলতে হয়,কিছু ভাল কাজ করতে হয়। জীবনটা শুধু হাহাহিহি করে কাটিয়ে দেয়ার জন্য নয়।একদিন যখন জীবনের মুখোমুখি দাঁড়াতে হবে,তখন দেখবেন,পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে যাচ্ছে,মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ছে। স্কিল ডেভেলাপমেন্টের জন্য সময় দিতে হয়। এসব একদিনে কিংবা রাতারাতি হয় না।”আপনার মত করে লিখতে হলে আমাকে কী করতে হবে?আমি আপনার মত রেজাল্ট করতে চাই। আমাকে কী করতে হবে?”এটা আমি প্রায়ই শুনি।আমি বলি,”অসম্ভব পরিশ্রম করতে হবে।নো শর্টকাটস্। সরি!”রিপ্লাই আসে,”কিন্তু পড়তে যে ভাল লাগে না। কী করা যায়?”এর উত্তরটা একটু ভিন্নভাবে দিই। আপনি যখন স্কুল কলেজে পড়তেন,তখন যে সময়ে আপনার ফার্স্ট বয় বন্ধুটি পড়ার টেবিলে মুখ থুবড়ে পড়ে থাকত,সে সময়ে আপনি গার্লস স্কুলের সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতেন। এখন সময় এসেছে,ও ওখানে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকবে আর আপনি পড়ার টেবিলে বসে থাকবেন।জীবনটাকে যে সময়ে8 চাবুক মারতে হয়,সে সময়ে জীবনটাকে উপভোগ করলে,যে সময়ে জীবনটাকে উপভোগ করার কথা,সে সময়ে জীবনটাকে উপভোগ করতে পারবেন না,এটাই স্বাভাবিক।এটা মেনে নিন। মেনে নিতে না পারলে ঘুরে দাঁড়ান।এখনই সময়! বড় হতে হলে বড় মানুষের সাথে মিশতে হয়,চলতে হয়,ওদের কথা শুনতে হয়। এক্ষেত্রে ভার্সিটিতে পড়ার সময় বন্ধু নির্বাচনটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। আপনার সাবকনশাস মাইন্ড আপনাকে আপনার বন্ধুদের কাজ দ্বারা প্রভাবিত করে। আমরা নিজেদের অজ্ঞাতসারেই আমাদের চাইতে ইনফেরিয়র লোকজনের সাথে ওঠাবসা করি,কারণ তখন আমরা নিজেদেরকে সুপিরিয়র ভাবতে পারি।এ ব্যাপারটা সুইসাইডাল।আশেপাশে কাউকেই বড় হতে না দেখলে বড় হওয়ার ইচ্ছে জাগে না।আরেকটা ভুল অনেকে করেন। সেটি হল,ধনীঘরের সন্তানদের সাথে মিশে নিজেকে ধনী ভাবতে শুরু করা।মানুষ তার বন্ধুদের দ্বারা প্রভাবিত হয়।উজাড় বনে তো শেয়ালই রাজা হয়। আপনি কী শেয়াল রাজা হতে চান,নাকি সিংহ রাজা হতে চান,সেটি আগে ঠিক করুন। বিনীত হতে জানাটা মস্ত বড় একটা আর্ট। যারা অনার্সে পড়ছেন,তাদের অনেকের মধ্যেই এটার অভাব রয়েছে। এখনো আপনার অহংকার করার মত কিছুই নেই,পৃথিবীর কাছে আপনি একজন নোবডি মাত্র।বিনয় ছাড়া শেখা যায় না।গুরুর কাছ থেকে শিখতে হয় গুরুর পায়ের কাছে বসে। আজকাল শিক্ষকরাও সম্মানিত হওয়ার চেষ্টা করেন না,স্টুডেন্টরাও সম্মান করতে ভুলে যাচ্ছে।আপনি মেনে নিন,আপনি ছোটো।এটাই আপনাকে এগিয়ে রাখবে।বড় মানুষকে অসম্মান করার মধ্যে কোন গৌরব নেই।নিজের প্রয়োজনেই মানুষকে সম্মান করুন।

2
$ 0.34
$ 0.34 from @TheRandomRewarder
Sponsors of Athai
empty
empty
empty
Avatar for Athai
Written by
4 years ago

Comments

His motivation is very well I like . But I don't like His. He is a very characterless person.🙂

$ 0.00
4 years ago

What! I don’t think so... What he do that's like characterless for you?

$ 0.00
4 years ago

My icon 💓💓

$ 0.00
4 years ago