অপরাজিতা ফুল থেকে একটি পরী বেরিয়ে এলো। ফুলুফুলু রাজ্যের সবাই তো অবাক! ভাবছ ফুলুফুলু রাজ্যটা আবার কিরকম? বলছি শোন ফুলুফুলু রাজ্যে শুধু ফুলেরা বাস করে। তাদের প্রতিবেশী রাজ্যে হলো পুখুপুখু। এই রাজ্যে শুধু পাখিরা বাস করে।
এখন বলছি সেই পরীর কথা। পরীটির চোখের রঙ নীল। পুরো শরীরে রয়েছে তার নীল রঙের আভা। পুখুপুখু রাজ্যেও এই পরীর কথা পৌঁছে গেল।
[bad iframe src]
বুলবুলি পাখি পরীর সঙ্গে দেখা করতে এলো। কিন্তু পরী কারো সঙ্গে কোনো কথা বলল না। এভাবে এক সপ্তাহ কেটে গেল। একদিন হঠাৎ পরী গান গাইল।
শিউলি ফুলপরীর কাছে এসে বলল, বাহ! তুমি তো অনেক ভালো গান গাও। কি নাম গো তোমার?
আমার নাম নীলপরী।
তুমি ফুলুফুলু রাজ্যে কেন এসেছ?
আমি ফুল হতে এসেছি।
মানে?
আমার খুব ইচ্ছা আমি ফুল হব। তারপর সবাই আমাকে ডাকবে নীল ফুলপরী।
তুমি ফুল কেন হতে চাও?
কারণ ফুলেরা অনেক নিষ্পাপ হয়। তারা কখনো কারো মনে কষ্ট দেয় না। ফুলেরা সবাইকে ভালোবাসতে পারে। ধনী, গরিব, ছোট, বড় সব মানুষকে তারা আদর ও সম্মান করে। আর জানো পৃথিবীতে যে কোনো উৎসবে সবাই ফুলকে অলঙ্কার করে সাজে। আবার ভালোবাসার সম্পর্কও বিনিময় করে ফুল দিয়ে।
এসব কথা শুনে শিউলি ফুল তো অনেক খুশি।
মনের আনন্দে সে বলল- দারুণ খবর শুনলাম। আচ্ছা নীলপরী তুমি কোথায় বাস কর?
আমি পৃথিবী গ্রহে বাস করি। আর যে দেশে থাকি সেই দেশের নাম বাংলাদেশ।
আচ্ছা তোমাদের দেশে কী কী উৎসব হয়?
ঈদ, পূজা, বড়দিন, নববর্ষ পালন। আর জন্মদিনেও ধুমধাম করে পালন করা হয়।
সব উৎসবে কি আমাদের দেখতে পাও?
অবশ্যই। তোমাদের অলঙ্কার করেই তো সবাই সাজে। আবার উৎসবগুলোয় একে অন্যকে ফুলও উপহার দেয়।
অসাধারণ। আমরা অনেক ভাগ্যবান, নীলপরী।
হুম। আমিও তাই মনে করি।
আচ্ছা তুমি ফুল হয়ে কি করবে?
সবার মাঝে ভালোবাসা ছড়িয়ে দেব। যাতে কেউ কারো সঙ্গে হিংসা না করে। ঝগড়া-বিবাদ না করে। সবাই যেন সুখে-শান্তিতে বাস করতে পারে। তাই ফুল হবো।
বাহ! দারুণ কথা! শোন তুমি আর তিনদিন আমাদের রাজ্যে থাকলে ফুল হয়ে যাবে।
ধন্যবাদ শিউলি ফুল।
নীল ফুলপরী অপেক্ষা করতে লাগল। এভাবে তিনদিন কাটল।
তারপর এক ভোরে নীলপরী ফুল হলো। তার ডানায় সাদা বেলিফুল ফুটল। মাথার মুকুটে ফুটল লাল গোলাপ। আর পুরো শরীরে ফুটল নীল অপরাজিতা ফুল।
এই খবর পুখুপুখু রাজ্যে ছড়িয়ে পড়ল। পুখুপুখু রাজ্য থেকে শালিক, দোয়েল, বুলবুলি সবাই নীলপরীকে দেখতে এলো।
বুলবুলি পরীকে জিজ্ঞাসা করল-
কি নাম তোমার পরী?
আমি নীল ফুলপরী।