বাড়ির পাশেই তার বাস। সে কখনো ঘুরে তাকায় নাহ। আমি চেয়ে চেয়ে দিন পার করি। যখন সে ছাদে উঠে, আমি ছাদে বই নিয়ে তার দিকে তাকিয়ে থাকি। মাঝে মাঝে চোখ পড়ে যায় আমার উপর। আমি না দেখার ভান করে নিজের মত থাকি। কিন্তু কিভাবে বলব সে চোখের স্বচ্ছতায় যে আমার হৃদয়ের বাস। তার হাসিতে যে আমি পাগল হয়ে গেছি।
তবু দিন যায়, মাস যায়। তার হাসি বদলায় নাহ। শুধু অই গাছের সবুজ পাতাটা ঝরে যায়। তার চোখের স্বচ্ছতা বদলায় নাহ, বদলায় আমার হাতের বইটা।
এইতো সেদিন, ঈদের কথা। আমাদেরটার পাশে তাদের গরুটা আমি জানতাম নাহ। হঠাৎ সে ছুটে এতে থাকল। আমার লাল পাঞ্জাবীর সাথে তার জামাও লাল। সে ছুটে আসতে থাকল, আমার বা পাশ প্রায় থমকে গেল। সে কেন আসছে আমার দিকে এভাবে?
নাহ আমার দিকে তাকায়নি। সে তাদের গরুর সামনে দাড়াল। আর তখনই সে আমার দিকে তার চোখের সকল স্বচ্ছতা কে আমার দৃষ্টিতে দিল। আমার তখন কি হচ্ছিল আমি ভাষায় বলতে পারব নাহ।
তাদের গরুর কোরবানি হচ্ছিল। তার চোখ শিশিরের মত অশ্রতে টলমল করছিল। তার এই অশ্রুত চোখ আমার হৃদয় কে ভেঙে চুরমার করছিল। সে তোহ বুঝতে পারছিল নাহ তার অশ্রু আমার মাঝে কি যে আবেগের এক অসম্ভব পরিণতি হচ্ছিল। নিজে আজ ছেলে বলে নিজের অশ্রু আটকিয়ে রাখছিলাম।
সে তার ভেজা চোখগুলো দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি আমার দৃষ্টি সরাতে পারছি নাহ। কিভাবেই পারব? যার জন্য ছাদে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকা, আজ সে সামনে। আজ কী তাকে এভাবেই ছেড়ে দেয়া যায়? তার চোখদুটো যেন কথা বলছিল। সেগুলো তে কি আমার ভালবাসা লেখা আছে? নাকি আমার থেকে দূরে সরে যেতে চায়?
সে তার দৃষ্টি ভেঙে চলে যেতে থাকল। আমি চেয়ে রইলাম। আমার বা পাশটা আমাকে অবশ করে দিয়েছে। আজ আমি এত অসহায় কেন? কেন বলতে পারছি নাহ মনের কথা?
তখন বৃষ্টির ঝরঝর কিছু বিন্দু আমার শরীর স্পর্শ করল। তখন বুঝতে পারলাম, সে জুড়েই আমার পৃথিবী। তাকে ছাড়া আমার জীবন বেচে থাকা অসম্ভব। সে ই আমার সব
আমি এগিয়ে গেলাম তার দিকে। সে যাচ্ছিল চলে। তার হাত ধরে ফেল্লাম। আমার বুক ধ্রফর করছে। সে কি আমার হাত টা ছুড়ে ফেলে দিবে? আমাকে ফেলে চলে যাবে?
সে যাই হউক, সে হাত আমি ছাড়ব নাহ। জীবন চলে গেলে যাক
সে আমাকে অবাক করে দিয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরল। সে মূহুর্তে আমি কিংকর্তব্যবিমুঢ়। তাকে কি আমিও স্পর্শ করব? তখন বুঝলাম, এই হয়ত ভালবাসা।
৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷