স্কুলের দেয়াল বা কলেজের বেঞ্চগুলোর কথা মনে আছে? কলমের আঁচড়ে, স্কেলের কাটাকুটিতে নানাভাবে, নানা ভঙ্গিমায় প্রথম ভালোবাসার কথা ব্যক্ত করেছেন সেখানে আপনাদের অনেকেই। কিন্তু সে তো ছোটবেলা কিংবা বড়বেলার ওই একান্ত ব্যক্তিগত ভালো লাগা আর লাজুক প্রকাশের ভেতরেই সীমাবদ্ধ ছিল। কজনই বা জেনেছেন এর কথা? যাঁকে ভালোবাসা জানিয়েছেন তিনিও কি জানতে পেরেছেন শেষ পর্যন্ত? কিন্তু এবার ভালোবাসা প্রকাশের যে স্থানটির কথা বলব সেটির কথা কেবল এর স্রষ্টাই নন, জানে অনেক মানুষই। আর এ ভালোবাসার জন্যও ভালোবাসা দিয়ে ভরা স্থাপনাটি প্যারিসের আই লাভ ইউ দেয়াল।
শুরুটা ফেদেরিক বেহমের হাত দিয়ে। তবে আগ্রার তাজমহলের নির্মাতা শাহজাহানের মতো কোনো মমতাজ তাঁর ছিল না। একান্ত ব্যক্তিগত শখ থেকেই পৃথিবীর তাবৎ ভাষার ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি’ বাক্যটি সংগ্রহ করতে শুরু করেন। একটি নোটবুকে টুকে রাখেন ওগুলো। তবে পৃথিবীর দেশে দেশে ঘুরতে হয়নি তাঁকে এ জন্য। বিভিন্ন দূতাবাসে ধরনা দিয়ে এখানকার বাসিন্দাদের থেকে ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি’ কথাটি সেই দেশের ভাষায় লিখে নিতে থাকেন ফেদেরিক নিজের নোটবুকে। এভাবে তিন শরও বেশি ভাষায় ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি’ কথাটি সংগ্রহ করেন। ভাবছেন এটুকুতেই শেষ?
না, ফেদেরিকের পাগলামি থামেনি এখানেও। বাক্য সংগ্রহের পর তিনি হাজির হন ক্যালিগ্রাফি বিশেষজ্ঞ ক্লেয়া কিতোর কাছে। কিতো ফেদেরিকের কথা অনুযায়ী শব্দগুলো সুন্দরভাবে একত্র করার কাজটি করেন। প্যারিসের মোমার্থের অ্যাবেস উদ্যানের ভেতরের চল্লিশ বর্গমিটারের এক দেয়ালে লাভার আবরণের ৬১২টি টুকরোর ওপর ৩০০টি ভাষায় আমি তোমাকে ভালোবাসি কথাটি লেখা হয় এক হাজারবারের বেশি। প্রেমিক-প্রেমিকাদের দেখা করার একটি চমত্কার জায়গা হিসেবেও এই দেয়াল এখন দারুণ জনপ্রিয়।
Nice article