#Mr_Devil
(A psycho love story)
লেখিকা: নুসরাত জাহান অংকুর
পার্ট_২৬
মুন দেখে টেবিলের এই পাশ থেকে ঐপাশ সব খাবার আর খাবার একটু ও জায়গা নেই।
আম্মু : কি রে ওখানে দাড়িয়ে আছিস কেন আয় বস
মুন রোদের পাশে গিয়ে বসে পরলো।
মুনের আম্মু সবাইকে পরিবেশন করছে ।
আব্বু : তা কাল নাকি তোরা কোথাও বেড়াতে যাবি?
মুন : তোমরা যাবে আমাদের সাথে ?
আম্মু : না রে মা
মুন : কেনো চলো না খুব মজা হবে
আব্বু : না এবার তোরা যা পরের বার আমরা যাবো ।
মুন : আমি বলছি তাই
আব্বু : আরে না রোদ তো সেদিন কত জোর করলো কিন্ত আমাদের ওতো দূরে যাওয়ার ইচ্ছা নেই তুই আর রোদ যা পরের বার আমরা যাবো
মুন অবাক হয়ে রোদের দিকে তাকিয়ে আছে।
একটা মেঁয়ের বিয়ের পর এর থেকে বেশী আর কি চাই । সব মেয়ে চায় বিয়ের বর তার স্বামী যেনো তার আব্বু আম্মু কে নিজের মতো দেখো । এটা একটা মেয়ের সব থেকে বড়ো পাওয়া ।
আম্মু : আল্লাহ কাছে দোয়া করি যেনো আমাদের রোদ আর মুনের জিবনে খুব তাড়াতাড়ি আমাদের নাতি নাতনী আসে ।
মুনের আম্মুর কোথায় রোদের কাশি উঠে গেলো। সবাই রোদকে পানি দিচ্ছে ।
মুন লজ্জায় মাথা নিচু করে আছে । রানী মুচকি মুচকি হাসছে ।
আব্বু : আহ্ তুমি ও না খাওয়ার সময় কেউ এসব কথা বলে । জানো না খাওয়ার সময় বেশি কথা বলতে নেই । বাবা এখন কেমন আছো (রোদকে ইশারা করে)
রোদ পানি খেয়ে। নিজেকে সামনে বলে
রোদ : জী আব্বু ঠিক আছি
খাওয়া শেষে সবাই যে যার রুমে চলে গেল।
মুন রুমে গিয়ে দেখে রোদ বারান্দায় দাড়িয়ে আছে আছে ।
মুন : এখন কি বের হতে হবে?
রোদ : না আর একটু পর তুমি চাইলে বাবা মার সাথে এখন সময় কাটাতে পারো ।
মুন : সমস্যা নেই সকাল থেকে ছিলাম
মুন রোদের পাশে গিয়ে দাড়াল।
মুন একটু পর রোদকে জড়িয়ে ধরে
মুন : থ্যাঙ্কু সো মাচ আমাকে এত সুন্দর একটা দিন দেওয়ার জন্য আমার আব্বু
রোদ : থাক আর বলতে হবে না তোমাকে যেদিন বিয়ে করেছি সেদিন উনারা আমার আব্বু হয়ে গেছে সো আমি আমার আব্বু আম্মুকে নিয়ে কি করবো সেটার তোমার কাছ থেকে শুনতে চাইনি । তোমার তো পাখনা গজিয়েছে মুখে যা আসছে তাই বলছো (ধমক দিয়ে)
মুন : ধুর শুধু বকে মনডা চায় লাথি মেরে
নিচে ফালাই দি (মনে মনে)
(হো ঠিক কয়ছিশ আমার ও একই অবস্থা এক্সাম খারাপ করছি আমি আমাকে সান্তনা না দিয়ে উল্টো বকাবকি করছে মনডা চাইছিল টিকটিকির ছুপ করে খাওয়াই । সাথে ব্যাঙের সস ফি)
রোদ : কি হলো কি এতো গালি দিচ্ছ
রোদের কথায় মুন হচ্কিয়ে যায়
মুন : গালি কিসের গালি আমি কেনো আপনাকে গালি দিতে যাবো আপনার আমায় দেখে ওমন মনে হয়
রোদ : হয়েছে পাকামো কথা এখন যাও আব্বু আম্মুর সাথে দেখা করে আসো
মুন : হুম
মুন ওর আব্বু আম্মুর সাথে দেখা করতে গেলো । রোদ ওখানেই দাড়িয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে আছে ।
দুনিয়ার সব মানুষ যদি ভালো হতো তাহলে দুনিয়াটা অন্য রকম হতো সম্পটির লোভ মানুষকে অমানুষ বানিয়ে দেয়।
।
।
।
মুন ওর আব্বু আম্মুর সাথে গল্প করে ঘটে এসে ফ্রেশ হয়ে নিল।
রানী : মুন এখন কি বেরোবি ?
মুন : হুম তুমি গুছিয়ে নাও
রানী মুন গুছিয়ে ওর আব্বু আম্মুর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে গেলো।
গাড়িতে মুন বাইরের দিকে তাকিয়ে আছে । রোদ ড্রাইভ করছে আর রানি ফোন চালাচ্ছে।
একটু পর গাড়ি একটা শপিং মলের সামনে এসে দাড়ালো ।
রোদ মুন রানী ভিতরে গেলো ।
রোদ : রানী তুমি তোমর ড্রেস কিনতে লাগে রাজ এখনই আসবে ।
রানী : হুম
মুন আর কি পুতুলের মত দেখছে কারণ মুনের ড্রেস তো রোদ দেখছে ।
আমার মত আমার আব্বু ও আমার ড্রেস পছন্দ করে দেয় । সব সময় এখন ও আব্বুর কাছে আমি বাচ্চা ।
একটু পর রাজ আসলো।
রানী : কই ছিলে এতক্ষণ এতো দেরি লাগে এখন আমার ড্রেস পছন্দ করে দাও ।
রাজ আর রানি শপিং করছে আর রোদ মুনের গায়ে একটা করে ড্রেস দিচ্ছে আবার অন্য টা
মুন : আমার শপিং তো অনেক করলেন এখন আপনার শপিং করেন ?
রোদ ....
মুন : অদ্ভুত লোক তো ছোটো বেলায় মনে হয় মধুর বদলে নিমের রস খাইয়েছিল ।
হটাৎ মুনের রোদের ছোটো বেলার কথা মনে পড়ে যায়।
রানী : এই মুন এদিকে আয় তো
মুন : আমি একটু আপুর কাছে যাচ্ছি
রোদ : হুম
মুন রানীর কাছে গেলো
মুন : কি হয়েছে আপু ?
রানী : দেখ তো এর মধ্যে কোনটা নেবো
মুন : ভাইয়া কে দেখাও
রাজ : আমি যেটা বলবো সেটা উনার পছন্দ না
রানী : এই তুমি চুপ করো তোমার কি কোনো চয়েস আছে
রাজ : কি বলতে চাও?
রানী : আমি বলছি যে তোমার কোনো পছন্দ নেই
রাজ : আমার পছন্দ তো তুমি তাহলে
রানী : দেখছিস মুন কিভাবে আমাকে অপমান করলো
মুন : আচ্ছা ঠিক আছে চুপ করো আমি দেখছি
মুন একটু দেখে একটা ড্রেস রানীকে দেয়।
রানী : এটা তো খুব সুন্দর
মুন : তোমরা দেখো আমি উনার কাছে গেলাম
মুন রোদের আছে যায়
রোদ : কি হচ্ছিল ওখানে ?
মুন : তেমন কিছু না সব শেষ
রোদ : হুম
মুন : এবার আপনার জন্য কিনতে হবে
শপিং শেষে সবাই খাওয়া দাওয়া করে বাড়ি চলে আসলো।
মুন বাড়ি এসে বিছানায় ধপাস ।
রোদ ফ্রেশ হতে গেলো।
ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে দেখে মুন শুয়ে আছে ।
রোদ : কিহলো যাও ফ্রেশ হয়ে আসো
মুন : এখন আমি পারবো না পরে যাচ্ছি
রোদ : কোনো কথা না আগে যাও
মুনের আর কি করার অনিচ্ছা সত্বেও যেতে হলো।
মুন বেরিয়ে দেখে রোদ বিছানায় ল্যাপটপে কাজ করছে মুন বিছানায় শুয়ে পড়ে ।
একটু পর
রোদ : মুন ড্রেস গুলো তো গুছালে না
মুনের কোনো সাড়া শব্দ নেই
রোদ :৮টা বাজে আর ম্যাডাম ঘুম
রোদ মুনকে ভালো করে শুয়ে দিয়ে গায়ে কম্বল দিয়ে দেয়।
আর রোদ ল্যাপটপে কাজ করছে ।
অনেকক্ষণ পর রোদ ল্যাপটপ রেখে ঘুমিয়ে পড়ে ।
সকালে
রানী : মুন এই মুন (দরজায় ধাক্কা দিতে দিতে)
রানীর ডাকে রোদ উঠে দরজা খুলে দেয়।
রানী : মুন কোথায় ?
রোদ : ও তো ঘুমুচ্ছে
রানী মুনকে ডাকতে লাগে
মুন : কি হয়েছে আপু (চোখ ডলতে ডলতে)
রানী : ঐই তাড়াতাড়ি উঠ আজ না আমাদের যাওয়ার কথা
মুন : সে তো বিকালে এখন উঠে কি করবো
রানী : কত কাজ বাকি আছে জানিস উঠ তাড়াতাড়ি
রানী মুনকে বাথরুমে ঢুকিয়ে দিয়ে আসে ।
মুন গোসল করে এসে বিছানায় শুয়ে পড়ে ।
রোদ : কি হলো তুমি আবার শুয়ে পড়লে কেনো রানী ডেকে গেলো না
মুন : আমার ঘুম পাচ্ছে
রোদ : এই মেয়ে যে কত ঘুমাতে পারে আল্লাহ জানে ।
একটু পর রানী আবার মুনকে টেনে টুনে নিয়ে যায় ।
রানী আর মুন মিলে নাস্তা বানায়
রানী: মুন এগুলো ওদের দিয়ে আয় আমরা পরে খেয়ে নেবো এখন এগুলো দিয়ে পার্লারে যেতে হবে
মুন : ওখানে কি করতে যাবে
রাণী: সাজবো না
মুন : ওহ
মুন উপরে রাজকে দিয়ে রোদকে দিতে যায়
রোদ : আজ এখানে নিয়ে আসলে ?
মুন : আপনি কাজ করছেন তাই
রোদ : তুমি খেয়েছ ?
মুন : পরে খাবো আপনি খান
মুন চলে আসতে গেলে রোদ ওর হাত ধরে টেনে নিজের কোলে বসিয়ে দেয়।
রোদ : হা করো
মুন : আআা
রোদ : হা করো
মুন হা করলে রোদ মুনের মুখে খাবার ঢুকিয়ে দেয়।
মুন : কিহলো এটা
রোদ : এতো আমি খেতে পারবো না আর তুমি পরে খাওয়ার টাইম পাবে না আমাদের তাড়াতাড়ি বের হতে হবে
মুন চুপচাপ খেয়ে যাচ্ছে আবার রোদকে ও খাইয়ে দিচ্ছে ।
নিচ থেকে রানী মুনকে ডাকছে
মুন : আপু ডাকছে
রোদ : খাওয়া শেষ করে তারপর যাবে
মুন : আমি আর খাবো না আপনি খান আমি কফি দিয়ে যাচ্ছি
রোদ : আচ্ছা যাও
মুন রোদের কোল থেকে উঠে নিচে যায়
রানী : কিরে এতক্ষণ লাগে ?
মুন : আপু আমাদের বিকালে বের হতে হবে তোমাকে পার্লারে যেতে হবে না এখনও সব গুছানো বাকি
রানী : আমাকে তো যেতে হবে
মুন : আপু এক কাজ করো পার্লার থেকে লোক আন সেজে নাও আমি সব গুছিয়ে রাখি
রানী : ভালো কথা বলেছিস তুই আমার টা গুছানো আছে তুই তোর ব্যাগ গুছিয়ে নে । তার আগে রান্না করে নি
মুন : হুম
মুন রানীকে রান্নায় সাহায্য করতে লাগলো।
রান্না শেষে রানী পার্লারে চলে যায় আর মুন ব্যাগ গুছাতে লাগে ।
মুন : আচ্ছা আমরা কইদিন থাকবো ?
রোদ : ৭দিন
মুন : তাহলে তো অনেক কিছু নিতে হবে
রোদ : কাল যা কিনেছি সেইগুলো শুধু নাও আর যা লাগে ওখান থেকে কিনে নিবেন
মুন : আচ্ছা
ব্যাগ গুছানো প্রায় শেষ ।
রোদ : রাজকোথায় ?
মুন : আপু পার্লারে গেছে সাথে রাজ ভাইয়া ও
রোদ : তুমি যাওনি ?
মুন : না আমার ওসব ভালো লাগে না
রোদ : ঠিক আছে ওতো আটা ময়দা মেখে কি হবে দেখবো তো আমি ।
মুন ভেংচি কাটে
রোদ : মুন একটু কফি নিয়ে আসো তো
মুন : আচ্ছা
মুন কফি করে রোদের কাছে যায়
মুন : নিন (কফির কাপটা এগিয়ে দিয়ে)
রোদ : হুম
২জনেই চুপ
কিছুক্ষণ পর রোদ বলে
রোদ : ভাবছি আম্মুর ইচ্ছা পূরণ করব খুব তাড়াতাড়ি
মুন : কোন ইচ্ছা (অবাক হয়ে)
রোদ : কেনো নাতি নাতনী (চোখ মেরে)
মুন লজ্জায় চলে আসতে গেলে রোদ ওর হাত টেনে ধরে
রোদ : আমি কি যেতে বলেছি কি সাহস আমার অনুমতি ছাড়া চলে যাচ্ছে চুপ চাপ দাড়াও আগের কথা কি ভুলে গেছো
রোদের কথায় মুনের লজ্জা সরম সব উঠে গেলো
রোদ কফি খাচ্ছে আর মুনের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসছে ।
রোদ : গোসল করেছো?
মুন : না
রোদ : আমি ও করিনি
মুন : জান করেনিন
রোদ : হুম
রোদ কিছু না বলে মুনকে কোলে নিয়ে বাথরুমে যায়
মুন : আরে কি করছেন কি ছাড়ুন(ছুটাছুটি করতে করতে)
রোদ কোনো কথা না বলে সাওয়ার অন করে দেয়। পানি পড়ছে রোদ মুনকে কোলে নিয়ে দাড়িয়ে আছে । মুন রোদের চোখের দিকে তাকিয়ে আছে । এই চোখে মুনের জন্য আজ সীমাহীন ভালোবাসা যার কোনো শেষ।
রোদ মুনকে নামিয়ে দিয়ে মুনের কপালে ভালোবাসা একে দেয়। মুন ও পরম আবেশে ভালোবাসা গ্রহণ করে।
২জন দুজনের চোখের দিকে তাকিয়ে আছে । রোদ মুনের প্রতি আসক্তি হয়ে পরছে ।
আস্তে আস্তে রোদ মুনের উষ্ঠো আকরে ধরে নিজের ঊষ্ঠো দিয়ে
মুন রোদের শার্ট আকরে ধরে ।
বেশ কিছুক্ষণ পর রোদ মুনকে ছেড়ে জড়িয়ে ধরে সাথে মুন ও।
২জনের আর কোনো হুস নেই মনে হচ্ছে এভাবে জনম জনম পার করতে পারবে ।
এভাবে কতক্ষন ছিল কেউ জানে না ।
রোদ মুনকে ছেরে দিয়ে বলে
রোদ : ড্রেস দিয়ে যাচ্ছি চেঞ্জ করে নাও
মুন মাথা নাড়ে। রোদ বেরিয়ে গিয়ে একটা ড্রেস দিয়ে যায় ।
মুন ড্রেস পরে বাইরে এসে রোদকে দেখে ক্রাশ খায়
রোদ মুনের সাথে ম্যাচিং করে ব্ল্যাক শার্ট অ্যান্ড ব্ল্যাক জিন্স পড়েছে । সাদা শরীরে black কালার খুব মানাচ্ছে। মুখে চাপ দাড়ি আর প্রতিদিনের মত গোলাপী ঠোঁটে পাগল করা হাসি ।
রোদ আয়নায় চুল ঠিক করছিলো মুনকে দেখে থমকে যায়
মুন ব্ল্যাক গাউন পড়েছে ভেজা চুল তাতেই মুনকে খুব মায়াবী লাগছে ।
সুন্দর তো অনেক হতে পারে কিন্ত মায়াবী খুব কম মেয়ারা হয়।
রোদের এমন চাহনি তে মুন অনেকটা লজ্জা পায়
রোদ মুনের কাছে গিয়ে মুনকে বসিয়ে দেয়
রোদ : আজ আমি আমার বউকে সাজাবো
রোদ কাজল এনে মুনের চোখে দিয়ে দেয়।
চুলটা সুন্দর করে আচড়ে দেয়।
এতেই মুনের দিক দিয়ে চোখ সরানো যাচ্ছে
মুন আয়নায় নিজেকে থেকে অবাক কারণ রোদ এতো সুন্দর করে কাজল পড়িয়েছে যে চোখ সরানো যাচ্ছে না
২জন রেডী হয়ে নেয় । রাজ আর রানি ও রেডী ।
সবাই এক সাথে এয়ারপোর্টের দিকে যায়।
গাড়িতে রোদ বার বার মুনের দিকে তাকাচ্ছে।
রাজ : আমরা কি এক বারে এয়ারপোর্টে যাবো
রোদ : না আগে কিছু খেতে হবে বিকেল হতে গেলো
রাজ : আচ্ছা
রোদ গাড়িটা একটা রেস্টুরেন্টে নিয়ে যায় ।
মুন রোদ হাত ধরে ভিতরে গেলো ।
সবাই যে যার মতো খাবার অর্ডার দেয়।
রোদ মুনকে খাইয়ে দিতে যায় তখন কেউ একটা মেয়ে এসে পিছন থেকে রোদের গলা জড়িয়ে ধরে
মুন তো হা করে তাকিয়ে আছে
চলবে
Go ahead bandhubi