মেরুদণ্ড ব‍্যথা

0 8
Avatar for Alsha
Written by
4 years ago

মেরুদণ্ড ব্যথার ঘরোয়া সমাধান

পিটের ব্যাথায় ভুগেন অনেকেই। শারীরিক পরিবর্তন, আঘাত, পিঠের কোন অংশের অস্বাভাবিক বৃদ্ধিসহ নানা কারণে পিঠে ব্যাথা হতে পারে। ক্যানসারজনিত কারণেও অনেক সময় পিঠ ব্যাথা হয়। ব্যাথা সাধারনত পিঠের নিচের অংশ জুড়ে থাকে এবং সামনে বা পিছনে নড়াচড়া করার সময় আরো বৃদ্ধি পায়। তবে কিছু সহজ ঘরোয়া পদ্ধতি অবলম্বন করলে এ ব্যাথা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।


পীঠ ব্যাথা নিরাময়ে সাত উপায়-
(১)ব্যাথা প্রতিকারে বরফ সবচেয়ে বেশি কাজ করে। আপনি দিনে দুই থেকে তিনবার বরফ লাগিয়ে ব্যাথা এবং ফোলা উভয়ই কমাতে পারবেন। আর ব্যথা থেকে তাৎক্ষণিক মুক্তি পাওয়ার জন্য তোয়ালেতে বরফ মুড়িয়ে ব্যাথার স্থানে ব্যবহার করা যেতে পারে।

(২) যেহেতু আমরা বেশিরভাগ মানুষই দীর্ঘসময় ধরে বসে কাজ করি, তাই সঠিক ভঙ্গিতে বসাটাও অত্যন্ত জরুরি। সঠিকভাবে বসা পিঠের ব্যথা অনেকাংশেই দূর করতে সাহায্য করে।

[bad iframe src]

বসার সঠিক ধরণটা হল সকল হাড় সোজা রেখে ,পা মাটির সমতলে বসা।



(৩) নিয়মিত মালিশ শুধু যে পিঠে ব্যাথা কমায় তা নয় বরং সে সাথে অবসাদ নিরাময়েও কাজ করে।

(৪) সকালে খালি পেটে দুই তিন খণ্ড রসুন খেতে পারেন।  রসুনের তেল মালিশ করেও ভালো সুফল পাওয়া যায়।  

(৫) পিঠ ব্যথায় সবচেয়ে উপকারী হল নিয়মিত ব্যায়াম করা। এজন্য পেট ও পিঠের  নিয়মিত ব্যায়ামের প্রয়োজন।   

(৬)  কুসুম গরম পানিতে ইপসাম লবন মিশিয়ে গোসল করলে পিঠ ব্যাথা কমে যায়।  তবে এক্ষেত্রে পানির তাপমাত্রার ব্যপারে সতর্ক থাকতে হবে।

(৭) ব্যাথা নিরাময়ে হলুদ এবং মধু মিশানো দুধ পান একটি পুরনো পদ্ধতি। এটি শরীরের যেকোন ধরনের ব্যথাতেও বেশ কার্যকরী।

তবে দীর্ঘদিন ধরে পিঠে ব্যাথা থাকলে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।


ভিটামিন ‘ডি’

ভিটামিন ‘ডি’র স্বল্পতা হাড় দুর্বল করে ফেলে। গবেষণা বলছে, যারা মেরুদণ্ডের সমস্যায় ভোগে, তাদের ৮০ শতাংশের

শরীরেরই এই পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি রয়েছে।

তাই ভিটামিন ‘ডি’ সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। গায়ে লাগাতে হবে সকালের মিষ্টি রোদ।

সঠিক বালিশ

ঘুমের সময় মাথায় বালিশ নিয়ে ঘুমানোর সামান্য ত্রুটির কারণেও মেরুদণ্ডে ব্যথা হতে পারে।

বালিশ বেশি উঁচু হলে মেরুদণ্ডে চাপ পড়ে। তাই বালিশ এমনভাবে নির্বাচন করতে হবে যাতে শোয়ার

সময় মেরুদণ্ড সোজা থাকে। চিত হয়ে ঘুমানোর অভ্যাস থাকলে হাঁটুর নিচে আরেকটি বালিশ রাখা যেতে পারে।

সতর্কতার সঙ্গে ব্যায়াম

ব্যায়ামের সঠিক নিয়ম অনেকেই মেনে চলে না। কিন্তু এ কারণে মেরুদণ্ডে ব্যথা হতে পারে।

তাই ব্যায়াম করার সময় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

মেরুদণ্ডে বেশি চাপ পড়ে- এমন ব্যায়াম করা যাবে না। বসে থাকা নয়

অনেকেরই দিনের বেশির ভাগ সময় কাটে চেয়ারে বসে থেকে। কিন্তু একটানা একভাবে বসে থাকা

মেরুদণ্ডের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। তাই কাজের ফাঁকে উঠে দাঁড়াতে হবে, সম্ভব হলে কিছু সময় হাঁটতে হবে।

আর তাও সম্ভব না হলে বসার ঢঙে পরিবর্তন আনতে হবে।

ক্রাঞ্চ

ক্রাঞ্চ প্রায় ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত মেরুদণ্ডের সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে। তাই ব্যায়ামের তালিকায় রাখা

যেতে পারে ক্রাঞ্চ। এতে একটি সমতল জায়গায় লম্বা হয়ে শুয়ে পড়তে হয়। এরপর মাথার

পেছনে দুই হাত দিয়ে হাঁটু ভাঁজ করতে হয়। এই অবস্থায় মাথাসহ দেহের উপরিভাগ ওপরে তুলতে হবে।

মেরুদণ্ডের ব্যথায় ভোগেননি এমন লোকের সংখ্যা নেই বললেই চলে। সচারাচর মেরুদণ্ড বা শিরদাঁড়ার ঘাড়ের এবং কোমরের নিচের অংশে ব্যথা হয়ে থাকে। এ রোগ সম্পর্কে ধারণা পেতে হলে মেরুদণ্ড বা শিরদাঁড়া কী তা জানা প্রয়োজন।

এসব বিষয়ে একুশে টেলিভিশনের সঙ্গে কথা বলেছেন ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অর্থোপেডিকস ও ট্রমাটোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মিজানুর রহমান কল্লোল। সাক্ষাতকারটি নিয়েছেন মুছা মল্লিক। 

মেরুদণ্ডে ব্যথা হলে

  •    

 

আমরা যে দাঁড়িয়ে থাকতে পারি, বাঁকা হই সেটা মেরুদণ্ডের কারণেই। তাই মেরুদণ্ড খুব গুরুত্বপূর্ণ। মেরুদণ্ডের ব্যথায় অনেককেই ভুগতে দেখা যায়। সাধারণত জীবনযাপনের কিছু ভুল অভ্যাসের ফলে এই ব্যথা হয়ে থাকে।

 

কেন হয়?

দেহের ভারসাম্য বজায় রাখতে মেরুদণ্ডের প্রয়োজন। মেরুদণ্ডটি যেভাবে থাকার কথা সেই পদ্ধতির বাইরে গিয়ে যদি কাজ করা হয় তখনই অসুবিধা শুরু হয়। হয়তো ছোটখাটো কোনো অনিয়ম করলেন, তার কারণে এই ব্যথা হতে পারে। মনে করুন কোনো ভারী জিনিস হয়তো একটু কুঁজো হয়ে তুলতে গেলেন তখন ব্যথা লেগে গেল। মূলত আমাদের মেরুদণ্ডের মধ্যে শক্ত হাড়, নরম হাড় এবং মাংসপেশি থাকে। এই মাংসপেশির চাপের কারণে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ ব্যথাটি হয়। বাকি ২০ শতাংশ ব্যথা হয় অন্য কোনো কারণে। যেমন আমাদের যে নরম হাড় রয়েছে এটা একটা ডিস্কের মতো, এটি স্প্রিংয়ের মতো কাজ করে। এটি যখন দুর্বল হয়ে যায়, তখনই সমস্যা তৈরি হয়। তাছাড়া মেরুদণ্ড যখন ক্ষয় হওয়া শুরু হয় তখন অস্টিও

আর্থ্রাইটিস হয়ে যায়। এমন আরও নানা কারণে মেরুদ-ে ব্যথা হতে পারে।

 

কী সমস্যা হয়

নানা ধরনের লক্ষণের মধ্য দিয়ে বোঝা যায় মেরুদ-ে কোনো সমস্যা হয়েছে কি না। যেমন কোমরে ব্যথা হতে পারে, পা ঝিরঝির করতে পারে, কোনো আঙুল অবশ মনে হতে পারে, অথবা রগে টান লাগতে পারে। কিছুদূর হাঁটার পর মনে হবে আর হাঁটতে পারছেন না। বসে পড়তে হয়। একটু বিশ্রাম নিলে হয়তো আবার হাঁটতে পারেন।

চিকিৎসকের কাছে গেলে তিনি আপনার সমস্যা অনুযায়ী পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বলতে পারবেন আপনার আসলে ঠিক কোথায় সমস্যা হচ্ছে। আর এর জন্য চিকিৎসক এক্স-রে এবং এমআরআই করতে বলতে পারেন। শতভাগ নিশ্চিত হতে চাইলে এমআরআইয়ের বিকল্প নেই। এমআরআই করলে পাশে যে রগগুলো আছে সব ভেসে উঠবে, কোথায় রগ চাপ খেয়ে গেছে সেই জিনিসটিও বের হয়ে যাবে।

 

করণীয়

এই চিকিৎসাকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। প্রথমে ওষুধ খাওয়া, কাজ না হলে ইন্টারভনেশনে যাওয়া আর এটাতেও কাজ না হলে সার্জারি। তবে এতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। জীবনযাত্রার পরিবর্তনের মাধ্যমে ৮০ শতাংশ রোগ নিরাময় করা সম্ভব। কিছু অঙ্গবিন্যাস সঠিক নিয়মে করতে হবে। বিশেষ করে নারীদের। সারাদিনই তারা নানা ধরনের কাজের মধ্যে থাকেন, তাই তাদের এসব বিষয় খেয়াল রাখা জরুরি। তাছাড়া খাওয়ার দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে।

একুশে টেলিভিশন: মানুষের শিরদাঁড়ায় কি কি অংশ থাকে? 

• কশেরুকা বা ভারট্রিব্রা
• ফ্যাসেট জয়েন্ট
• ডিক্স
• সারভাইক্যালরা বা ঘাড়ের কশেরুকা
• থোরাসিক কশেরুকা 
• লাম্বার বা লোয়ার  ব্যাক কশেরুকা 
• স্যাকরাল 
• ককসিস২৪ টি কশেরুকা একটির ওপর অন্যটি বসে তৈরি করে শিরাদাঁড়া বা মেরুদণ্ড ওপরের অংশ বহন করে মাথা এবং নিচের অংশ পেলভিসের (শরীরে নিম্নাংশের হাড়সমূহের কেন্দ্রাভূত সংযোগ) সঙ্গে ভিত্তি তৈরি করে। প্রতিটি কশেরুকা ইন্টার ভারট্রিব্রাল ডিক্স দ্বারা আলাদা এবং ফ্যাসেট জয়েন্ট দ্বারা সংযুক্ত করে।

ফ্যাসেট জয়েন্ট এবং ইন্টার ভারট্রিব্রাল ডিক্সের বাইরে থাকে শক্ত ফাইবার যাকে মাঝে মাঝে জেলির মত তরল পদার্থ যা শক প্রবাহের ভার হিসেবে কাজ করে।

মেরুদণ্ডের এই আদর্শ অবস্থা যুবা অবস্থায় পরিলক্ষিত হয়, কিন্তু বয়সের সাথে সাথে ইন্টার ভারট্রিব্রাল ডিক্সে যেমন পরিবর্তন লক্ষিত হয় তেমনি এর টান টান ক্ষমতা আস্তে আস্তে প্রকট হয়। 



1
$ 0.14
$ 0.14 from @TheRandomRewarder
Avatar for Alsha
Written by
4 years ago

Comments