বড়শি হলো মাছ ধরার এক প্রকার সরাঞ্জম। এর অপর নাম মাছ ধরার ছীপ। যা মাছ বা মাছ জাতীয় প্রাণী ধরতে ফাঁদ হিসেবে ব্যবহার হয়। মানুষের হাতে এটি শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে ব্যবহার হয়ে আসছে। মিঠা ও নোনা জলের মাছ ধরার জন্য এটি বেশি ব্যবহার হয়। ফোবস কর্তৃক ২০০৫ সালে, মাছ ধরার শীর্ষ বিশ সরঞ্জামের মধ্যে বড়শিকে প্রধান সরাঞ্জাম হিসেবে নির্বাচিত করা হয়। [১] বড়শি সাধারণত বাঁশের ছিপ বা লৌহ দণ্ডের সাথে সুতা বরা চিকনাকৃতির রশির সাথে সংযুক্ত থাকে যা ধরা মাছকে খুব সহজে ফাঁদের মধ্যে নিয়ে আসে। মাছ ধরার জন্যে বিশ্বে প্রচুর পরিমাণে বড়শি রয়েছে। বড়শির আকার, উদ্দেশ্য, এবং উপকরণ মাছ ধরার পদ্ধতির ওপর নির্ভরশীল। বড়শি দিয়ে সাধারণত সীমিত আকারে মাছ ধরার সম্ভব। বড়শি বিভিন্ন ধরনের কৃত্রিম, প্রক্রিয়াজাত, মৃত বা জীবিত মৎস্যজাতীয় প্রাথী বীট ( বেত মাছ ধরার ) ধরার জন্য তৈরি করা হয়। মাছ শিকারের কৃত্রিম যন্ত্র হিসেবে এটি কাজ করে।
বরশি দিয়ে মাছ ধরা ইসলাম ধর্মে জায়েজ আছে কি
বরশি দিয়ে মাছ ধরা ইসলাম ধর্মে জায়েজ আছে। উদাহরণঃ আদী ইবনে হাতিম (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে তীরের শিকার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেনঃ যদি তীরের ধারালো অংশ দ্বারা আঘাত করে থাক তাহলে খাও , আর যদি ফলার আঘাত লেগে থাকে এবং শিকারটি মারা যায় , তাহলে খেও না। কেননা, সেটি ওয়াকীয বা থেতলে মরার মধ্যে গণ্য। যদি তীরের ধারালো অংশ দ্বারা আঘাত করে জবেহ করা পশু হালাল হয়! তাহলে বরশি দিয়ে মাছ ধরা ইসলাম ধর্মে নাজায়েজ হবে কেন? আর মাছকে তো জবেহ-ও করতে হয়না। আর হাদিস থেকে এই কথা বুঝা যায় যে, মাছ মারা গিয়ে পানির উপর ভেসে
বড়শি দিয়ে মাছ ধরার টোপ ....চারের তাত্বিক বিষয়
মাছ ধরার জন্য একটি অতি গুরুত্বপূর্ন উপাদান হলো চার। চার নিয়ে গবেষনার যেমন শেষ নেই তেমনি বিভিন্ন চারের ফমূলারও শেষ নেই। আজ চেষ্টা করবো চারের তাত্বিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করার যা আমাদের সাহায্য করবে এর কাজ, কিভাবে বানানো যায় এবং কি পরিস্থিতিতে কেমন চার করা উচিত এসব জানতে। যেহেতু চারের তাত্বিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে চাইছি তাই এখানে কোন ফর্মূলা উল্লেখ্য করছিনা কিন্তু কিভাবে বিভিন্ন চার বানানো যায় সে সর্ম্পকে আলোচনা করার চেষ্টা করছি যা নুতুন।
এক কথায় বলতে গেলে চারের কাজ হচ্ছে কোন নির্দিষ্ট স্পটে মাছকে আকর্ষিত করে নিয়ে আসা এবং সুস্বাদু ও রুচিকর বা মুখরোচক খাবারের সাহায্যে সেখানে ধরে রাখা। তাই চারের উপাদানগুলো এমনভাবে সিলেক্ট করা উচিত যাতে এই দুই উদ্দেশ্য সফল হয়। চারের মূল উপাদানগুলোর বিষয়ে সামান্য আলোকপাত করার চেষ্টা করছি:
(ক) আকর্ষক: প্রতিটি চারেই মূলত এক বা একাধিক আকর্ষক ব্যবহার করা হয়ে থাকে এবং এগুলো এমন পরিকল্পিতভাবে ব্যবহার করা হয় যাতে তা মাছকে টোপের কাছে নিয়ে আসে।এগুলোকে আমরা মোটামুটি তিনভাগে বিভক্ত করতে পারি- স্বাদ, গন্ধ ও বায়োকেমিক্যাল । কোন নির্দিষ্ট প্রজাতির মাছকে বা কিছু প্রজাতির মাছকে টার্গেট করে আকর্ষকের প্যাকেজ তৈরী করা যেতে পারে। চারের ব্যবহৃত সব ধরনের মসলা, বিভিন্ন ফ্লেভার বা নির্যাস (ভ্যানিলা, স্ট্রবেরী ইত্যাদি), গুড় বা মিষ্টির গাদ, বিভিন্ন ফলের রস, বীজ হতে উৎপাদিত ও উদ্ভিজ তেল, প্রানীজ তেল বা চর্বি, এসেনশিয়াল তেল (রসুন, গুল মরিচ, দালচিনি ইত্যাদি), প্রাকৃতিক নির্যাস (স্কুইড, কেচো, চিংড়িমাছ ইত্যাদি), নারকেল পচা ইত্যাদি মূলত চারে আকর্ষক হিসেবে কাজ করে। মসলা জাতীয় বা বায়োকেমিক্যাল আকর্ষকগুলো সবসময়ই অল্প মাত্রায় ব্যবহার করা উচিত কারণ অধিক মাত্রায় ব্যবহার করলে চার তার রুচিকর বা মুখরোচক বৈশিষ্টটি হারাতে পারে।
(খ) খাদ্য উপাদান বা বেজ: চারে ব্যবহৃত আকর্ষকের দ্বারা আকৃষ্ট হয়ে যে মাছগুলো পয়েন্টে এসে চারের খাদ্য উপাদানগুলো খেতে শুরু করে ফলে এরা মাছকে টোপের এলাকায় বেশীক্ষন আটকে রাখে। এসময়েই কিছু মাছ টোপের দিকে আকৃষ্ট হয় আর কিছু মাছ পয়েন্টের চার শেষ করে টোপ নেয়া শুরু করে, এ কারনে চারের সাথে অল্প পরিমান হুক বেইট যোগ করলে অনেক সময় ভালো ফল পাওয়া যায়। খাদ্য উপাদান হিসেবে মূলত খাদ্য শস্য বা বীজ জাতীয় উপাদান ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও বিভিন্ন খাদ্য উপাদান ব্যবহার করা যেতে পারে যেমন-খৈল, তিলের গুড়া, পাউরুটির গুড়া, বিভিন্ন বিস্কিট বা কেকের গুড়া, ভাত, ফিসমিল, ঘিয়ের ছাকা ইত্যাদি।
(গ) বাইন্ডার: চারের কার্যৃকারিতা অনেকাং
শে এর ঘনত্ব বা সংগতির (Consistency) উপর নির্ভৃর করে। উদাহরন হিসেবে বলা যেতে পারে নদীতে বা বেশী গভীর পানিতে যদি খুবই নরম চার ব্যবহার করা হয় তবে তা তলদেশে পৌছানোর আগেই গলে যাবে, ফলে টোপ যদি বটমে থাকে তবে এ চার কোন কাজেই আসবেনা। অগভীর স্থানে বা ভাসা খেলার ক্ষেত্রে এ জাতীয় চার অধিক কার্যৃকরী। তাই চারের প্রয়োজনীয় ঘনত্ব বা সংগতি (Consistency) আনায়নের জন্য বাইন্ডার ব্যবহার করা হয়ে থাকে। বাইন্ডার হিসেবে সাধারণত চারে আটা, ছাতু, বীজের পাউডার, চিড়া, চিড়ার গুড়া, শুকনো মাটি ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
উপরের এই তিন উপাদানগুলোকে সঠিকভাবে সমন্বয় করে নির্দিষ্ট ব্যবহারের জন্য বিভিন্ন রকম চার তৈরী করা যেতে পারে। কার্প জাতীয় মাছের জন্য নুতুন ধরনের চার সবসময়ই প্রাথমিকভাবে কার্যকরী হয় তবে বেশী ব্যবহার হতে থাকলে এর কার্যৃকরীতা কমতে থাকে। তাই এসব ক্ষেত্রে আপনার চারের যে কোন একটি উপাদান সরিয়ে তাতে সমজাতীয় আরেকটি উপাদান যোগ করে পরীক্ষা করতে পারেন, ফলাফল ভালো হতেও পারে।চারের অনেক উপাদানের মধ্যে একাধিক বৈশিষ্ট থাকতে পারে যেমন ভাত খাদ্য উপাদান বা বেজ আবার বাউন্ডার হিসেবেও কাজ করে।চারের মধ্যে অল্প পরিমানে হলেও তেলের উপস্থিতির প্রয়োজনীয়তা রয়েছে কারন তা আকর্ষককে দ্রুত ছড়িয়ে দিতে সাহায্য করে। আবার শীত কালে অপেক্ষাকৃত ঘন তেল দ্রুত ছড়াতে পারেনা এসময় হালকা তেল কিংবা গ্লিসারিন বা অ্যালকোহল ব্যবহার করা যেতে পারে।চার ব্যবহারের ক্ষেত্রেও কিছু টেকনিক ব্যবহার করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়, উদাহরন হিসেবে বলা যায় যে পুকুরে মাছের পরিমান কম সে পুকুরে যে চার ব্যবহার করতে হবে তাতে খাদ্য উপাদান কম থাকবে। আবার একবার চার না করে পয়েন্টে মাছের উপস্থিতির দেখে অল্প অল্প করে বেশ কয়েকবার চার করা অনেক বেশী কার্যকরী এতে মাছকে অনেকক্ষন পয়েন্টে আটকে রাখা যায়।
যখন একান্তই পিপড়া বা উলুর ডিম পাওয়া যায়না তখন আমি ছাতু বা রুটিতে ডিমের পরিবর্তে পুরাতন লাচ্ছা সেমাই (কাঁচা ও ঝড়ঝড়া) বা ডালের কাঁচা পাপড় গুড় করে মিশিয়ে মাছশিকারে খুব ভাল ফলাফল পেয়েছি।