জাতিসংঘের মানবোন্নয়ন সূচক, জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ, সামাজিক উন্নয়ন, নারীর ক্ষমতায়ন, ক্ষুধা প্রতিরোধ, সুশাসন, জঙ্গিবাদ প্রতিরোধ ইত্যাদি খাতে পাকিস্তান বাংলাদেশ থেকে পিছিয়ে পড়েছে। এমনকি নানা সামাজিক ও অর্থনৈতিক সূচকে ভারতকেও পেছনে ফেলেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের উন্নয়ন এক বিস্ময়কর ঘটনা। দুর্নীতি নির্মূল করতে পারলে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা একটি উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। আর আমরা হব গর্বিত জাতি।
প্রকাশ : ০৪ মার্চ ২০২০, ০০:০০
সালাম সালেহ উদদীন
চলছে স্বাধীনতার মাস। ১৯৭১ সালে মার্চের প্রথম দিনগুলো ছিল খুবই উত্তাল। তখন দেশব্যাপী অসহযোগ আন্দোলন চলছিল জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ও নির্দেশে। ১ মার্চ ১৯৭১ তারিখে জেনারেল ইয়াহিয়া জাতীয় সংসদের উদ্বোধনী অধিবেশনকে অনির্দিষ্টকালের জন্য মুলতবি রাখার ঘোষণা দিলেন। জেনারেল ইয়াহিয়া নির্বাচনে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের রায়কে মানবে না এবং নির্বাচনের মাধ্যমে যে অর্জন ও অধিকার তাদের প্রাপ্য, সেটা থেকে তাদের বঞ্চিত করতে চায়। সারা পূর্ব পাকিস্তানব্যাপী তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ মিছিল বের হয়ে গেল। অনেক লোক সামরিক বাহিনীর হাতে নিহত হলো। ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক গণসমাবেশে বাংলাদেশের নতুন জাতীয় পতাকা উড়িয়ে দেয়া হলো। সেই পতাকায় সবুজ পটভূমির মধ্যখানে ছিল গোল সূর্যের লাল আভা এবং সেই লাল গোলের ওপর আঁকা বাংলাদেশের মানচিত্র। ৩ মার্চ শেখ মুজিব, জুলফিকার আলী ভুট্টো ও জেনারেল ইয়াহিয়ার মধ্যে এক বৈঠক হয়। সেই আলোচনা ব্যর্থ হলো। ৩ মার্চ ঢাকায় এক জনসমাবেশে শেখ মুজিবের উপস্থিতিতে 'স্বাধীন বাংলার ইশতেহার' পাঠ করা হয়। পাকিস্তানি শাসনের বিরুদ্ধে সর্বপ্রকার অসহযোগিতা শুরু হলো। বাংলার মানুষ রুখে দাঁড়ালো। ২ মার্চ থেকে ২৫ মার্চ পর্যন্ত শেখ মুজিব পূর্ব পাকিস্তানের সব সরকারি ও বেসরকারি অফিস চালনার জন্য দৈনিক নির্দেশ দিতে লাগলেন। পাকিস্তান সরকারের জারিকৃত নির্দেশাবলিকে অগ্রাহ্য করা হলো। যার ফলে সেই সরকারের কর্মশক্তির বিলুপ্তি হলো।
আমরা জানি, দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে, ধর্মের দোহাই দিয়ে ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান সৃষ্টি হয়েছিল। এর অগ্রনায়ক ছিলেন জিন্নাহ তথা মুসলিম লীগ। কিন্তু অল্পদিনেই বাঙালিরা বুঝতে পারে, মুসলমান মুসলমান ভাই ভাই বলা হলেও প্রকৃত অর্থে পাকিস্তান তাদের নয়। প্রথমে ভাষার উপরে আঘাত দিয়ে শোষণ শুরু করে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী। রাষ্ট্র ভাষা বাংলার দাবিতে প্রথম আন্দোলনে কারাবরণ করেছিলেন বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা শেখ মুজিব। এরপর বাংলার এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে ছুটে বেড়িয়েছেন তিনি। প্রতিটি বাঙালির কাছে পৌঁছে দিয়েছেন পরাধীনতার শিকল ভাঙার মহা-মন্ত্র। পাকিস্তানের জন্মের শুরু থেকেই পূর্ব পাকিস্তানকে অর্থনৈতিকভাবে বশীভূত করা হয়। যদিও পূর্ব পাকিস্তান পাট রপ্তানির মাধ্যমে সমগ্র পাকিস্তানের সিংহভাগ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করত, পশ্চিম পাকিস্তানের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পেছনে তার অধিকাংশই বিনিয়োগ করা হতো। পাকিস্তানের পরিকল্পনা কমিশনের রিপোর্ট অনুযায়ী, ১৯৫০-১৯৭০ পর্যন্ত পূর্ব পাকিস্তানের জন্য সামগ্রিক বাজেটের শতকরা ২৮.৭ ভাগ ব্যয় করা হয়। পূর্ব পাকিস্তানের জনসাধারণ অনুভব করেছিল যে, তাদের পাকিস্তানের রাজনৈতিক ক্ষমতা ও অর্থনৈতিক সুবিধার ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছিল। এই বৈষম্য দূর করার জন্য আওয়ামী লীগ দলের নেতা শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬৬ সালে স্বায়ত্তশাসনের জন্য ছয় দফার একটি পরিকল্পনা রচনা করেন। ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৪'র যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ১৯৫৮'র সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন, ১৯৬৬'র ৬ দফা ও পরে ১১ দফা আন্দোলন এবং
Sheikh mujib, the hero of bangladesh ❤