শৃঙ্খলা মানব জীবনে এক ধরণের কল্যাণ বন্ধন। প্রতিকূল প্রকৃতির পরিবেশের বিরুদ্ধে লড়াই করার সময় মানুষ বিভিন্ন শৃঙ্খলার বন্ধন গড়ে তুলে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছে, সভ্যতা গড়ে তুলেছে। এইভাবে লোকেরা ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক এবং কর্মজীবনে শৃঙ্খলায় অংশ নিয়েছে। তিনি অভিজ্ঞতায় দেখা প্রতিটি ক্রিয়াকলাপের জন্য ভারসাম্যপূর্ণ সমন্বয় প্রয়োজন। তার দরকার শৃঙ্খলা। একটি সুশৃঙ্খল জাতি জাতীয় জীবনে মহান উন্নতি এবং অগ্রগতি নিশ্চিত করতে পারে।
প্রকৃতির রাজ্যে শৃঙ্খলা:
আইনের শাসন পৃথিবীর সর্বত্র। যেখানে শৃঙ্খলার অভাব নেই। তাঁর সম্পর্কে সমস্ত কিছুই শৃঙ্খলাবদ্ধ এবং সু-নিয়ন্ত্রিত। সূর্য সকালে উঠে প্রকৃতির ক্রম অনুসারে সন্ধ্যায় ডুবে যায়। চাঁদ ও তারাগুলি রাতের আকাশে উঁকি দেয়। দিনরাতের এই চক্র প্রকৃতির চারদিকে ঘোরে। প্রকৃতির এই আইন দ্বারা আবদ্ধ মানব জীবনে অস্তিত্ব। অতএব, প্রকৃতির মতো শৃঙ্খলাবদ্ধতার দায়িত্বও অনিবার্যভাবে মানব জীবনে আসে।
ব্যক্তি ও জাতীয় জীবনে শৃঙ্খলা:
মানব জীবনের বিকাশ ও ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা যুক্ত হয়। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত মানবজীবন বিভিন্ন বিধি-বিধি দ্বারা আবদ্ধ। এই শৃঙ্খলা মানব জীবনের একটি ছন্দের মতো। ছন্দ একটি জীবনকে শান্ত, স্থিতিশীল এবং ফলপ্রসূ করার একটি মাধ্যম। এটি সমাজ ও জাতীয় জীবনে অগ্রগতি নিশ্চিত করার চালিকা শক্তি। সুতরাং, সমাজের অগ্রগতি এবং মানুষের কল্যাণ নিশ্চিত করার স্বার্থে অনেক বিধি তৈরি হয়েছে। এই নিয়ম এবং শৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে মানুষের ব্যক্তিত্ব বিকশিত হয়, মানবতা এত প্রতিভাবান।
ছাত্রজীবনে শৃঙ্খলা:
শিক্ষিত লোকদের সুশৃঙ্খল জীবনের ভিত্তি ছাত্রজীবনে রইল। মানুষ যতই প্রতিভা নিয়ে জন্মগ্রহণ করুক না কেন, সুশৃঙ্খল জীবনের ছন্দের অভাব প্রায় সেই প্রতিভা এবং বর্জ্যের অপচয়। নিয়মানুবর্তিতা এবং নিয়মিততার সংমিশ্রণে ছাত্র জীবনে শৃঙ্খলার ছন্দ অর্জন হয়। এক্ষেত্রে ছন্দ জীবন হুমকিস্বরূপ হতে পারে। প্রকৃতপক্ষে, জীবনের গঠনের পর্যায়ে শৃঙ্খলার বীজ রোপণ এই মানব জীবনের কোনও পর্যায়ে সোনার ফলন দেয়।
কারণ আমরা সবাই জানি আমাদের জীবন ছাত্রজীবন থেকেই শুরু হয়। সুতরাং আমাদের আমাদের ছাত্রজীবন থেকে নিজেকে গড়ে তুলতে হবে। তার যথাযথ শৃঙ্খলা দরকার। কারণ ছাত্রজীবন থেকেই যদি শৃঙ্খলা তৈরির অনুভূতি তৈরি হয় তবে একজনকে সারাজীবন দুঃখ-কষ্ট ও জীবনযাপন করতে হবে। কারণ কোনও ব্যক্তি যথাযথ শৃঙ্খলা ব্যতীত যে কোনও সময় বিকাশ করতে পারে না। সুতরাং আমাদের অবশ্যই ছাত্রজীবন থেকেই শৃঙ্খলার বোধ তৈরি করতে হবে।
শৃঙ্খলা অর্জনের উপায়:
শৃঙ্খলা অনুভূতি অর্জন করার জন্য, কিছু রীতিনীতি অনুসরণ করা প্রয়োজন।
প্রথম প্রয়োজনটি সামাজিক রীতিনীতি মেনে চলা।
দ্বিতীয়টি হ'ল আইনকে সম্মান করা।
সম্মানের সাথে মানুষের সাথে সম্মান, ভালবাসা এবং স্নেহের সম্পর্ক অনুসরণ করতে শেখা সামাজিক শৃঙ্খলার প্রথম পদক্ষেপ।
অনুশাসনের বোধ অর্জনের জন্য ভাল নৈতিকতা এবং ভাল আচরণের প্রয়োজন।
জ্ঞান ও চিন্তার বিস্তার এবং শৃঙ্খলা অনুভূতি অর্জনের ইতিবাচক প্রভাব রয়েছে।
শৃঙ্খলা অনুভূতি অর্জন করার জন্য আমাদের অবশ্যই এই নীতিগুলির প্রতিটি অনুসরণ করতে হবে। তাহলে আমরা সঠিক উপায়ে সঠিক শৃঙ্খলা অর্জন করতে সক্ষম হব।
শৃঙ্খলাবদ্ধ বোধের গুরুত্ব:
বিশৃঙ্খলা আমাদের অগ্রগতি ব্যাহত করতে পারে। এবং তাই স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়া এবং মাদক মুক্ত জীবন যাপন অবশ্যই শৃঙ্খলার অংশ হতে হবে। শারীরিক পরিশ্রম কোনও ব্যক্তিকে কখনই ছোট করে না তবে এটি স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয়। সুতরাং শারীরিক শৃঙ্খলা নিশ্চিত করা সম্ভব। বিশৃঙ্খলা এড়িয়ে জীবনকে সুন্দর করে তুলতে শৃঙ্খলা বোধ করার বিকল্প নেই।
সুশৃঙ্খল জীবনের প্রতিটি মুহূর্তের সুবিধা নেওয়া হয়। এটি মহান ব্যক্তিদের জীবনে দেখা যায়। চিন্তাধারা ও কর্মের শৃঙ্খলা অনুসরণ করেই মানুষ নিজেকে একজন সম্ভ্রান্ত ও কর্তব্যরত ব্যক্তির মতো বিকাশ করতে পারে। দায়িত্বের প্রতি সততা এবং একাগ্রতাও শৃঙ্খলার একটি মৌলিক অঙ্গ। নাগরিক জীবনে স্বাচ্ছন্দ্য নিশ্চিত করতে শৃঙ্খলাবদ্ধ জীবনযাপন অপরিহার্য।
শৃঙ্খলা এবং মেকানিক্স:
শৃঙ্খলা আকাঙ্ক্ষিত হলেও, কখনও কখনও শৃঙ্খলার বাড়াবাড়ি জীবনের স্বাভাবিক গতির পথে দাঁড়িয়ে থাকে। নিয়ম বা নিয়ন্ত্রণের বাড়াবাড়ি যদি শৃঙ্খলা ছাড়াই শৃঙ্খলে পরিণত হয়, তবে জীবনের স্বাভাবিক বিকাশ ব্যাহত হতে বাধ্য। মানবজীবন তখন যন্ত্রের জীবন হয়ে যায়। এই সম্পর্কে একটি সতর্ক হওয়া উচিত। এটি অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে এই জীবনটি জীবন-অনুসরণকারী শৃঙ্খলার স্বাভাবিক গতিতে মসৃণভাবে বিকাশ লাভ করে।
অবশেষে আমরা বলতে পারি:
শৃঙ্খলা হ'ল একটি ব্যক্তি এবং একটি জাতির জীবনে ভারসাম্যপূর্ণ সৌন্দর্য। অভদ্র আচরণ, অন্যায্য জবরদস্তি, অবৈধ পেশী শক্তি মানুষের জীবনের আরামকে নষ্ট করে। এগুলি জাতীয় অগ্রগতির পথে মারাত্মক বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। অন্যদিকে, জাতির অগ্রগতি এবং সামগ্রিক অগ্রগতির ভিত্তি হ'ল ব্যক্তির শৃঙ্খলা অনুভূতি। সুশৃঙ্খল চিন্তাভাবনা এবং প্রতিটি ব্যক্তির কর্মের শক্তি দিয়েই জাতি বিশ্ব পরিষদে দাঁড়াতে পারে।
আপনারা সবাই এই নিবন্ধটি পড়ার জন্য আমন্ত্রিত। আমি আশা করি আপনি আমার নিবন্ধটি পড়তে পারবেন এবং অনেক কিছু বুঝতে এবং শিখতে পারবেন।
ধন্যবাদ সবাইকে.....
English language 👇
অসাধারণ লিখেছেন ভাইয়া