আসসালামুআলাইকুম। আজকে আবার আসলাম আপনাদেরকে গল্প শোনাতে। স্টেশনে দেখা হওয়া একটা মেয়ের কাহিনি নিয়েই আপনাদের সামনে আবার এসেছি। যারা প্রথম ভাগটি পড়েন নি,তারা দয়া করে প্রথম ভাগটি পড়ে নিন তাহলে বুঝতে পারবেন আশা করি।
তো, মেয়েটি গভীর চিন্তার মধ্যে ডুবে আছে। দেখে বড় মায়া হলো আমার, কিন্তু কিভাবে কথা বলবো তা বুঝতে পারছিলাম না। তারপর ভাবলাম মেয়েটি তার মত করেই থাক আমার কোনো প্রয়োজন নেই তার সাথে কথা বলার। এই ভেবে উঠে দোকানে গেলাম কিছু খাবো বলে। দোকান থেকে ফিরতেই দেখি মেয়েটার সামনে একটা ছেলে দাড়িয়ে আছে। ছেলেটা অল্প বয়সী ছিলো,দেখে মনে হচ্ছিলো কোনো দোকানে হয়তো কাজ করে, মাথার চুল গুলোতে কালার করা ছিলো। সে মেয়েটির সামনেই দাঁড়িয়ে ছিলো কিন্তু কোনো কথা বলছিলো না, ভেবেছিলাম এমনি হয়তো দাঁড়িয়ে আছে। প্রায় ৩০ মিনিট পর ছেলেটি একটু উচ্চস্বরে বললো, "চলো,আর বলবো না। এখনি বাসায় চলো" মেয়েটি বললো," না যাবো না।" ছেলেটি বললো, " কত টাকা এনেছো বাসা থেকে? " মেয়েটি কোনো কথা বললো না। ছেলেটি তখন জোর করে তার হাত থেকে টাকাগুলো নিয়ে নিলো। মেয়েটির সাথে কোনো ব্যাগ ছিলো না, সে শুধু কিছু টাকা নিয়েই ঘুম থেকে উঠে চলে এসেছে। আমার পাশে কিছু হিন্দু মহিলা ছিলো। তারা ব্যাপারটি দেখে মেয়েটির সাথে কথা বলতে গেলো। তাদের কথা অনুযায়ী যেটা বুঝেছিলাম তা সংক্ষিপ্তআকারে বলছি,এই ছেলেটি হলো তার দেবর। মেয়েটি তার শ্বশুড়বাড়ি থেকে লুকিয়ে চলে এসেছে। তার স্বামী বাড়িতে নেই আর তার শ্বশুড়বাড়ির লোকজন তার উপর অনেক অত্যাচার করে। আর সব থেকে বেশি অত্যাচার করে তার দেবর। তাই মেয়েটি আর সহ্য করতে না পেরে বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে চেয়েছে। কিন্তু মেয়েটির ভাগ্য খারাপ, কিছুক্ষণের মধ্যেই তার শ্বাশুড়ি চলে এসেছে। কি ভয়ংকর ছিলো তার শ্বাশুড়ি!!! তিনি আসতেই এক ধমক দিলেন," বাসায় চল"। মেয়েটি কিছুই বললো না। আবার জোরে এক হুংকার দিলেন," বাসায় চল বলছি"। মেয়েটি ভয়ে মাথা নিচু করে চলে গেলো।
মেয়েটি চলে যাওয়ার পর মহিলারা বললো, সে বাসায় গিয়ে অনেক মার খাবে। শুনে খুব কষ্ট লাগলো। আসলেই মেয়েটি কি মার খাবে!! আমি কি কিছুই করতে পারবো না!! আসলেই তো কিছুই করতে পারলাম না।
কিছুক্ষণের মধ্যেই আমাদের ট্রেন আসে, পুরো রাস্তা শুধু মেয়েটির কথাই মনের মধ্যে জেগেছে আর তার 'আপু' ডাকটি কানের মধ্যে বেজেছে।
Wow