-স্পর্শা!এই স্পর্শা!
-হু বল।
-ফোনের দিকে মন থাকলে তোকে কথা বলবো কিভাবে?তাকা না আমার দিকে।
স্পর্শা ফোন রেখে এনার দিকে তাকায় আর বলে,
-কি বলবি বল।
এনা কিছু বলে না।লজ্জায় হাত দু খানা দিয়ে মুখ ঢাকে।স্পর্শা হিমের দিকে আড়চোখে তাকিয়ে বলে,,
-কি হইছে রে?
-মেডামকেই জিজ্ঞাসা কর।হাবভাবে মনে হচ্ছে মনে লাড্ডু ফুটছে।
-এই ছাগল কি হইছে?
-আমি কমু না।আমার শরম করে।
কথাটা বলে আবার এনা হাত দিয়ে নিজের মুখ ঢাকে।স্পর্শা কষিয়ে একটা থাপ্পড় মারে এনার বাহুতে।এনা উহ করে আওয়াজ করে।তারপর বলে,,
-মারলি কেন?
-তুমি ঢং করবা তো তোমায় মারবো না তো কি করবো!ডায়লগ মারা বাদ দিয়া বল কি হইছে।
-একটা কাজ করবি?
-কি কাজ?
এনা ব্যাগ থেকে একটা চিঠি বের করে স্পর্শার হাতে দেয়।দেখে মনে হচ্ছে লাভ লেটার।স্পর্শা উল্টিয়ে পালটিয়ে চিঠিটা দেখে,,
-এইটা তো মনে হচ্ছে লাভ লেটার।
-এনা তুই প্রেমে পড়ছিস?
পাশ থেকে অবাক দৃষ্টিতে বলে উঠে হিম।স্পর্শা এনার হাতে আবার চিঠিটা দিয়ে বলে,,
-যে ছেলেকেই তোমার ভালো লাগুক সেই ভালো লাগা সাময়িক সময়ের জন্য। বাদ দে এইগুলা।
-নিজে তো জোড়া পাইছো তাই এই কথা বলতাছো
-আমি মনে হয় নাচতে নাচতে বিয়ে করতে গেছি!
-বিয়ে?স্পর্শার বিয়ে হইছে?
পাশ থেকে অবাক দৃষ্টিতে স্পর্শার দিকে তাকিয়ে কথাটা বলে হিম।হিমের কথার জবাবে স্পর্শা বলে,,
-যেহেতু তুই আমার ফ্রেন্ড তোর কাছ থেকে কিছু লুকাবো না।হ্যাঁ আমার বিয়ে হইছে।তাও ক্লাস নাইনে থাকতে।
-হায় আল্লাহ বাল্যবিবাহ। তুই বিয়েটা করতে পারলি?
-জোর করে দেওয়া হইছে আমার বিয়ে।বিয়েটা সম্পুর্ণ এক্সিডেন্টলি হইছে।
-তোর হাজবেন্ড কি করে?কই থাকে?তোর খোকাখুকি কোন ক্লাসে পড়ে?
-মারবো এক চড়!খোকাখুকি আসলো কই থেকে?
-এত বছর ধরে বিয়ে করছিস খোকাখুকি হয় নাই?
-না হয় নাই
-দুলাভাই কই থাকে কি করে বল!শালা হিসাবে কিছু তো প্রাপ্য আছে।
-সিনিয়র রামিম ইসলাম ইয়ানের কাছে যা। শালা হিসাবে যা চাওয়ার চেয়ে নিস।যদিও সে এখনো নিজের পায়ে পুরোপুরি দাঁড়ায় নাই।যা চাবি সাধ্যের মধ্যে চাস।
পাশ থেকে এনার কথাটা বলে হিমের কথার জবাব দেয়।এনার এমন কথা শুনে হিম পুরো বকা বনে যায়।নকল হাসি দিয়ে হিম বলে,,
-এনা তুই মজা করতেছিস না?
-আমি মজা করার মুডে নাই।থাকলে করতাম।এই স্পর্শা চিঠিটা কাব্য ভাইয়াকে দিয়ে আয় না!
-ওও কাব্য ভাইয়াই সেই ছেলে!যে এই গাধীর মন কেড়েছে?
টিটকারি মারার মতো করে এনাকে কথাটা বলে স্পর্শা।স্পর্শা জবাবে এনা বলে,,
-হ্যাঁ রে!তুই কাব্য ভাইয়ার সাথে অনেক ক্লোজ।তুই চিঠিটা উনাকে দিয়ে আয়না!প্লিজ আমার সোনাটা!আমার হীরাটা।
-আচ্ছা বাবা।আমি চিঠিটা কাব্য ভাইয়াকে দেবো।কিন্তু উনি কই?উনাকে তো দেখছি না।
-ওইযে।এফ্রোন পড়া হাতে নীল থেতোস্কোপ।
স্পর্শাকে এনা ইশারায় কাব্যকে দেখিয়ে দেয়।স্পর্শা কাব্যের কাছে যায়।এমনেতে বেশ ফ্রী ভাবেই কাব্যের সাথে স্পর্শা কথা বলে।কিন্তু আজ কেমন যেন সংকোচ বোধ করছে স্পর্শা।হালকা কেশে কাব্যকে ডাক দেয় স্পর্শা। কাব্য পেছন ঘুরে স্পর্শার দিকে তাকায়।স্পর্শা চক্ষু তখন চড়কগাছ।এ তো কাব্য নয় এ তো ইয়ান।স্পর্শা থ মেরে যায়।ইয়ান স্পর্শার হাতে চিঠিটা দেখে বলে,,
-লাভ লেটার তো মনে হচ্ছে!মুখে যেই কথা বলতে পারো না সেই কথা গুলো লিখে জানাবে নাকি?
স্পর্শা চিঠিটা পেছনে নেয়।তোতলাতে তোতলাতে ইয়ানকে বলে,,
-আ...আ..আপনি....ভা...ভা...ভাইয়া!
-লজ্জা লাগা দরকার।সিনিয়রকে চিঠি দিয়ে প্রোপোজ করতে আসছে।বাই দ্যা ওয়ে! প্রপোজ করার আগে বিসমিল্লাহ বলছো তো?
-আমার তো আর কাজ নাই আপনাকে প্রপোজ করবো!শুনেন এই চিঠিটা আপনার জন্য না।এইটা কাব্য ভাইয়ার জন্য।উনাকে দিয়ে দিয়েন।
কথাটা বলে স্পর্শা ইয়ানের হাতে চিঠিটা ধরিয়ে দেয়।তারপর ছাউনির দিকে পা বাড়ায়।ঠিক সেই সময় পেছন থেকে ইয়ান,,
-উনি থাকতে তুমি আবার কাব্যের সঙ্গে প্রেম করবা?
-আমার প্রেম করার ইচ্ছা মুড কোনোটাই নাই।এইটা এনা লেখছে।জায়গার জিনিস জায়গায় পৌঁছায় দিয়েন।
-বিসমিল্লাহ বলে পৌঁছায় দেবো নাকি বিসমিল্লাহ বলবো না।
-যা মন চায় কইরেন।আমি চললাম।
কথাটা বলে স্পর্শা রাগে গজগজ করতে করতে ইয়ানের কাছ থেকে চলে যায়।ইয়ান স্পর্শার যাওয়ার পানে তাকিয়ে মুচকী মুচকী হাসতে থাকে।
-হ্যালো আম্মু বলো।
-স্পর্শর সাথে মিলির বিয়েটা ভাবছি এই বার সেরে ফেলবো।সামনে মাসে মালয়েশিয়া থেকে আসছে স্পর্শ।স্পর্শ আর মিলির বিয়ের সাথে তোদের বিয়ের অনুষ্ঠানটাও সেরে ফেলবো কি বলিস?
ফোনের ওপাশ থেকে কথাটা স্পর্শাকে বলেন মিসেস নীলা।মায়ের কথার জবাব দিতে স্পর্শা বলে,,
-তোমরা যা ভালো বুঝো করো।
চলবে,,,
গল্পটা কি আরও বড় করবো নাকি শেষ করে দেবো।আপনারা যা বলবেন তাই হবে।কমেন্টে নিজেদের মতামত জানাবেন😊ধন্যবাদ ☺️
০৮ মাস পরেও যার পরিবার করোনা ভাইরাস থেকে হেফাজতে আছে তারা একবার বলি আলহামদুলিল্লাহ।