নকশী কাঁথা আমাদের ঐতিহ্য । আমাদের লোকশিল্পের অংশ। এক সময় এই কাঁথার খুব প্রচলন ছিল। এখনো গ্রামবাংলার কোথাও কোথাও এই কাঁথা বুনতে দেখা যায় । অবসর সময়ে বা বৃষ্টির দিনে মহিলারা একসাথে বসে গল্প আর আড্ডায় কাঁথা সেলাই করেন। দাদী - নানীরা এখনো তাদের নাতি নাতনিদের নতুন বিয়ে হলে বা কারো বাচ্চা হলে এই নকশী কাঁথা দিয়ে থাকেন । একসময় এইসব কাঁথা বিয়েতে উপহার হিসেবেও দেওয়া হতো
এইসব কাঁথা তে হরেক রকম ফুল, লতা - পাতার নকশা করা থাকে। কিছু কাঁথায় আবার গ্রাম বাংলার প্রকৃতি ও ফুটিয়ে তুলা হয়। এক একটি কাঁথার বুননের পিছনে লুকিয়ে থাকে একটি পরিবারের আনন্দ - বেদনা।
রঙিন সুতা দিয়ে কাঁথার গায়ে নানা ফোঁড়ের নকশা করা হয়।
নকশী কাঁথা যে একটি জীবন গাঁথা হতে পারে তার প্রমাণ পাই জসিম উদ্দিনের "নকশী কাঁথার মাঠ" কবিতা থেকে । রূপাই আর সাজুর সেই প্রেম আর বিরহ সব ফুটে উঠেছিল ওই কাঁথায়।
" নক্সী-কাঁথাটি বিছাইয়া সাজু সারারাত আঁকে ছবি,
ও যেন তাহার গোপন ব্যথার বিরহিয়া এক কবি |
অনেক সুখের দুঃখের স্মৃতি ওরি বুকে আছে লেখা,
তার জীবনের ইতিহাসখানি কহিছে রেখায় রেখা | "
সাজুর শেষ ইচ্ছা ছিল সেই কাঁথা যেন তার কবরের উপরে মেলে দেওয়া হয় । তার শেষ ইচ্ছা পূরণ হয়েছিল 😥
পরিশেষে, এই কাঁথা আমাদের সংস্কৃতির অংশ। সংস্কৃতি রক্ষা করার দায়িত্ব ও আমাদের !
নকশিকাঁথার চাহিদা কমে গেলেও গ্রাম বাংলায় এখনো নকশি কাথা দেখা যায়।তবে এই কাথা ভুলার নয় কেননা এটা আমাদের ঐতিহ্য